নাটোরের লালপুরে চাঁদপুর ১ নম্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, প্রধান শিক্ষক কাউকেই টাকা নেয়ার রশিদ দেননি বলেও অভিযোগ।
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, বিজ্ঞান বিভাগের ২৫ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নির্ধারিত এক হাজার ৯৭০ টাকার পরিবর্তে তিন হাজার ১৫০ টাকা ও মানবিক বিভাগের ৭৮ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে এক হাজার ৮৭০ টাকার পরিবর্তে তিন হাজার ৫০ টাকা আদায় করেছেন প্রধান শিক্ষক। আর নির্ধারিত সময় শেষে ফরম পূরণের ক্ষেত্রে জরিমানাসহ তিন হাজার ৫৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী রাহিমা আক্তার মনি অভিযোগ করে, ‘ফরম পূরণের সময় হেড স্যার (প্রধান শিক্ষক) পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন—তিন হাজার ১৫০ টাকা দিতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো কথা বলা যাবে না। টাকা দিলে ফরম পূরণ হবে, অন্যথায় হবে না।’ আরেক পরীক্ষার্থী আশা খাতুনের বাবা আছেদ আলীর অভিযোগ, সমিতি থেকে সুদে তিন হাজার ১৫০ টাকা নিয়ে মেয়ের ফরম পূরণ করেছেন। অন্যদিকে সাথী আক্তার লতা ও হোসনে আরার কাছ থেকে অতিরিক্ত এক হাজার ৬৮০ টাকা করে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়া সুমাইয়া, নুজবা, আবৃত্তি, আমিরুল, জিতু, মেহেদির অভিযোগ, ফরম পূরণের সময় অতিরিক্ত এক হাজার ১৮০ টাকা করে দিয়েছে তারা। আর সাথী আক্তার লতা ও হোসনে আরার কাছ থেকে অতিরিক্ত এক হাজার ৬৮০ টাকা করে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
তবে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক আজমল সেখ। তাহলে পরীক্ষার্থীদের কেন রশিদ দেয়া হলো না—এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। উল্টো তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে শিক্ষা কর্মকর্তা, ইউএনও বা ডিসি সাহেবের কাছে অভিযোগ করে আপনাদের (সাংবাদিকদের) কোনো লাভ হবে না।’
কদিমচিলান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টার অভিযোগ করেন, ‘আমি নিজে একজন অতিদরিদ্র পরীক্ষার্থীর জন্য মানবিক বিভাগের নির্ধারিত এক হাজার ৮৭০ টাকা নিতে প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু এ অনুরোধও তিনি রাখেননি। তিনি তিন হাজার ৭০ টাকা থেকে একটি টাকাও কম নেননি।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মূল বানীন দ্যুতি বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বলেন, ‘অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’