এসএসসি ও সমমাসের পরীক্ষার ফল চ্যালেঞ্জ করা শুরু হয়েছে। প্রথমদিন মঙ্গলবার সকালে ঢাকা বোর্ডে ভিকারুননিসা, মনিপুর হাইস্কুল ও আদমজীসহ কয়েকটি স্কুল থেকে অংশ নেয়া উদ্বিগ্ন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভডাবকদের দেখা যায়। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কক্ষের সামনে দেখা যায় কয়েকজন ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা কান্নাকাটি করছেন। সোমবার প্রকাশিত ফল তাদের প্রত্যাশা পূরণ করেনি। তাই ফল চ্যালেঞ্জ করতে ও খোঁজ নিতে বোর্ডে ছুটছেন। যদিও আবেদন করতে হবে অনলাইনে।
জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক পরীক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাকে জানান সে ইংরেজিতে জিপিএ-৫ পাননি। তাই গোল্ডেন (সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পাওয়া) ছুটে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফল প্রকাশের পরদিন এভাবে দেশের আটটি সাধারণ বোর্ডেই ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্টরা ভিড় করেছেন। এসব ব্যক্তির মধ্যে কেউ রাজনীতিবিদ, আবার কেউবা সরকারি কর্মকর্তা। আছেন সাংবাদিক ও প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার প্রভাবশালীরা। কেউ জিপিএ-৫ না পাওয়া, ভালো পরীক্ষা দিয়েও একেবারে ফেল করার নালিশও নিয়ে এসেছেন অনেকে।
অতীতে পরীক্ষক ও টেবুলেটরদের ভুলের শিকার হতে দেখা গেছে অনেক শিক্ষার্থীকে। এ কারণে রেজাল্ট চ্যালেঞ্জ করে পরে জিপিএ-৫ পাওয়ার ঘটনাও আছে। এসব কারণে অনেক শিক্ষার্থীই ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করছেন।
ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবুল বাসার সাংবাদিকদের জানান, ফলাফল পুনঃনিরীক্ষার বিষয়টি পুরনো। পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর একটা সময়ের জন্য এ লক্ষ্যে আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়। এবারও ১৩ মে পর্যন্ত আবেদন নেয়া হবে। আগে বোর্ডগুলোতে সশরীরে এসে ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করতে হতো। এখন টেলিটকে এসএমএসেই আবেদন করা যায়। আবার মোবাইলে এসএমএসেই ফল জানিয়ে দেয়া হবে। তবু অভিভাবকরা চলে আসছেন। আসলে টেনশন ও আবেগ থেকে তারা আসছেন।
জানা গেছে, পুনঃনিরীক্ষার ক্ষেত্রে খাতা পুনরায় মূল্যায়ন হয় না। শুধু মূল্যায়িত খাতাটিতে সব প্রশ্নের উত্তরে নম্বর দেয়া হয়েছে কিনা, দেয়া নম্বর ঠিকমতো গণনা করা হয়েছে কিনা, প্রাপ্ত নম্বর পরীক্ষক ঠিকমতো ওএমআর ফরমে লিখেছেন কিনা এবং সেই লেখা অনুযায়ী বৃত্ত ভরাট করেছেন কিনা- এ চারটি দিক শুধু দেখা হয়।
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, এ চারটি দিক দেখা হলেও অনেক ক্ষেত্রে ভুল ধরা পড়ে। আসলে ভুলভ্রান্তি মানুষেরই হয়ে থাকে। সেই ভুলের খেসারত যাতে কাউকে না দিতে হয় সে জন্যই এ পুনঃনিরীক্ষার ব্যবস্থা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বোর্ডের প্রবিধানমালায় খাতা নতুন করে পুনঃমূল্যায়নের বিধান না থাকায় তারা কেবল পুনঃনিরীক্ষার কাজ করে থাকেন। এ প্রক্রিয়ায়ও অনেকের ফলাফল উন্নয়ন হয়।
এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল একটু ব্যতিক্রম হয়েছে। পাসের হার বাড়লেও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। তিন লাখ ৭৮ হাজার ৬৫০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন।