এসিটিদের স্থায়ী ব্যবস্থা করা হোক - দৈনিকশিক্ষা

এসিটিদের স্থায়ী ব্যবস্থা করা হোক

মো. শহিদুল ইসলাম |

বিলুপ্ত সেকায়েপ প্রকল্পের শিক্ষকদের চাকরি নতুন এসইডিপি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন ও অনশন করছেন। যা দেখে শিক্ষিত সমাজ ও নিবন্ধনধারী ভাই ও বোনেরা বিভিন্ন মন্তব্য করছেন। তাদের জ্ঞাতার্থে কিছু কথা বলতে চাই। প্রথমত তারা বিলুপ্ত প্রকল্পের শিক্ষক; অন্য প্রকল্প বা প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা করছেন। তারা শুধু মাধ্যমিক পর্যায়ের তুলনামূলক কঠিন বিষয় ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান এবং দেশের দুর্গম ও শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া উপজেলায় শিক্ষাদানে নিয়োজিত ছিলেন। মূল ক্লাসের বাইরে সবচেয়ে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদাভাবে প্রতি মাসে কমপক্ষে ১৬টি ক্লাস নিতে হয়েছে তাদের।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের এমপিওভুক্ত করানোর উদ্যোগ নিলেও তা থেকে সরে এসেছে। আর আন্দোলনরত শিক্ষকরাও এখন আর এমপিওভুক্ত হতে চান না। তারা এসইডিপি প্রকল্পে অথবা অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক হিসেবে চাকরি স্থায়ীকরণ চান।

এই শিক্ষকরা দেশের দুর্গম এলাকার প্রতিষ্ঠানে টানা ৩ বছর (২০১৫ থেকে ২০১৭) পর্যন্ত শিক্ষকতা করেছেন। সেকায়েপ প্রকল্পের ম্যানুয়ালে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছিলো প্রকল্প শেষে অন্য প্রকল্পে স্থায়ী করা হবে। আর এ আশায় তারা ধ্যান-জ্ঞানে মগ্ন হয়েছিলেন এ মহান পেশায়। 

যেহেতু তারা ৩ বছর শিক্ষকতা করেছেন। সেহেতু তারা অভিজ্ঞ এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে শর্ত ছিল প্রথম শ্রেণিপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, কাজেই তারা মেধাবী ও যোগ্য। এমনকি ম্যানুয়ালে উল্লেখ রয়েছে, এদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ এনটিআরসি কর্তৃক সাময়িক সনদ প্রদান সাপেক্ষে এমপিওভুক্ত করা হতে পারে।

মনে রাখা দরকার শুধু ৫ হাজার ২০০ অতিরিক্ত শ্রেণিশিক্ষক নয়, এর সাথে তাদের পরিবারের সদস্যরাও যুক্ত। আমার জানা মতে, এই প্রকল্পে এমনও শিক্ষক রয়েছেন যার উপার্জনের ওপর তার পরিবার ও সংসার চলতো। তারা আজ অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন পার করছেন।

তাছাড়া এদেরকে মন্ত্রণালয়ের সেইভাবে নিয়োগ দেওয়া দরকার ছিলো যে প্রজেক্ট শেষ মেয়াদও শেষ। কিন্তু কেন চাকরির বিজ্ঞপ্তি ও অপারেশন্স ম্যানুয়ালে মেয়াদ শেষে অন্য প্রকল্পে অথবা স্থায়ীকরণ করা হবে বলে উল্লেখ ছিল? আর কেনই বা মেয়াদ শেষে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছিল? আর কেনই বা মডেল শিক্ষক হিসেবে উপাধি দেয়া হয়েছিল? আর কেনই বা বলা হয়েছিল এরা অত্যন্ত মেধাবী ও অভিজ্ঞ? এমনকি সদ্যনসাবেক শিক্ষামন্ত্রীও বলেছিল এসকল যোগ্য মেধাবী শিক্ষককে যেকোন উপায়ে সহায়ীকরণ করা হবে। কেন বলেছিলেন এমনটা?

এ সকল শিক্ষকের ভুল কোথায় আর কেনই বা এসকল শিক্ষক এখন ফুটপাত বা রাজপথে পরে রয়েছেন। এদের রাজপথে পরে থাকাটা কি যৌক্তিক নয়?

বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও মহান সৃষ্টিকর্তার ওপরই রয়েছে তাদের ভবিষ্যত। তবে একটি কথা বলতে চাই, বাংলাদেশে কোনও মেধাবী শিক্ষিত সমাজকে চাকরিতে আকৃষ্ট করতে এরূপ প্রজেক্ট বা প্রকল্পের শুভ আগমন যেন না ঘটে; যা পরবর্তিতে অনেকের কাছে অশুভ হয়ে ওঠে! পরিশেষে বলি, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করা হোক। যে ব্যক্তি অপরের রুটি-রুজিতে আঘাত দেবে সৃষ্টিকর্তাও তার রুটি-রুজিতে আঘাত দিতে পারেন। প্রশ্ন রইল, বিবেকবান মানুষের কাছে?

লেখক : অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক, বিএসসি (অনার্স) ফার্স্ট ক্লাস, এমএসসি (এ্যাপ্লায়িড কেমিস্ট্রি) ফার্স্ট ক্লাস (ঢাবি), বি.এড (ফার্স্ট ক্লাস),মধুখালী, ফরিদপুর।

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070719718933105