কওমি শিক্ষার্থীদেরকেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, নীতিবোধ ও সর্বজনীন মানবাধিকারের ওপর কোর্স পড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশে আলিয়া মাদরাসা এবং সাধারণ বাংলা মাধ্যমের শিক্ষাক্রমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কোর্স চালু থাকলেও কওমি মাদরাসা ছিল তার ব্যতিক্রম। কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতির পর কওমি মাদরাসায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অভিন্ন কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র।
জানা গেছে, গত ৫ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত একটি সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সব অধিদপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র সাহা সভাকে জানান, ‘বিভিন্ন ধারার শিক্ষাক্রমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, নীতিবোধ ও সর্বজনীন মানবাধিকারের কোর্স চালু রয়েছে। কিন্তু কওমি মাদরাসাগুলো এর ব্যতিক্রম।’ উপস্থিত অন্যরাও বিষয়টিতে একমত পোষণ করেন। এ প্রেক্ষিতে সভায় কওমি মাদরাসায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি অভিন্ন কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে প্রস্তাব তৈরি করে কওমি মাদরাসা বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সভায় ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কোর্স পড়ানো হয় কি-না তা সরেজমিন দেখতে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে নির্দেশ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে মুক্তিযুদ্ধের কোর্স না পড়ালে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।
উল্লেখ্য, কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি) সমমান দিয়ে গত বছর আইন পাস করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।