কওমি মাদরাসা সনদের স্বীকৃতি নিয়ে আর কথা থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তাদের স্বীকৃতি দিয়ে সরকার কোনো অন্যায় করেনি। আর মাদরাসা জঙ্গিবাদ সৃষ্টির কারখানা—এই ধারণার সঙ্গেও একমত নন। সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্য ও রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাদরাসার মাধ্যমে থেকে এই ভূখণ্ডে মুসলমানদের শিক্ষা শুরু হয়েছিল। ৪ থেকে ৫টা বোর্ড কওমি মাদরাসার ছেলেমেয়েদের পড়াত। প্রায় ২০ লাখ ছেলেমেয়ে সেখানে পড়াশোনা করে। মাদরাসা আছে বলেই যাদের মা–বাবা নেই তারা সেখানে স্থান পাচ্ছে। খাওয়া-দাওয়া পাচ্ছে। কাজেই তাদের অস্বীকার করতে পারি না।’
সনদের স্বীকৃতির যৌক্তিকতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা দেশেরই সন্তান, দেশেরই মানুষ। তাদের কি ফেলে দেব? কারিকুলাম ঠিক করা, শিক্ষাটাকে মানসম্মত করা, চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই চিন্তা থেকেই তাদের সনদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এটা কোনো অন্যায় কাজ আমরা করিনি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কেউ কেউ বলবেন মাদরাসা হচ্ছে জঙ্গিবাদ সৃষ্টির কারখানা। কিন্তু আমি এটার সঙ্গে একমত নই। হলি আর্টিজানে জড়িতরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করা। উচ্চশিক্ষিত পরিবার ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া। কওমি মাদরাসা সনদের স্বীকৃতির আইন পাস হয়েছে সর্বসম্মতভাবে। এটা নিয়ে তো আর কথা থাকতে পারে না। এই বিষয়টি নিয়ে আর বোধ হয় প্রশ্ন আসবে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ হবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ। এবার জনগণ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘মাথা থেকে যদি দুর্নীতি হয় এবং তা নিচ পর্যন্ত যায় তাহলে তা নির্মূল করা কঠিন। কই আমরা তো দুর্নীতি করতে আসিনি। আমাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল। কিন্তু প্রমাণ করতে পারেনি। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি বলেই উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে।’
অধিবেশনে আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সাংসদ আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নুর–ই–আলম চৌধুরী প্রমুখ। সবার শেষে একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন সমাপ্তি ঘোষণা–সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির ঘোষণা পড়ে শোনান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।