আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম কবি শামসুর রাহমান। আজ তার ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৬ সালের এই দিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। কবি শামসুর রাহমানের প্রয়াণ দিবসে আজ সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে রাজধানীর বনানীতে কবির কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এছাড়া জাতীয় কবিতা পরিষদ ও কবি শামসুর রাহমান স্মৃতি পরিষদের পক্ষ থেকে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকার মাহুতটুলিতে জন্মেছিলেন কবি শামসুর রাহমান। ৭৭ বছরের বর্ণময় জীবনের বড় অংশজুড়েই নিমগ্ন থেকেছেন কবিতা সৃজনের মোহ ও অনুরাগে। পুরান ঢাকায় বেড়ে ওঠায় নগরজীবনের নানা অনুষঙ্গ ও প্রকরণ উদ্ভাসিত হয়েছে এ নাগরিক কবির কবিতায়। জীবনানন্দ-পরবর্তী বাংলা কবিতাকে আধুনিকতার পথে ধাবিত করায় তার ভূমিকা একেবারেই স্বতন্ত্র।
বিশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ হিসেবে প্রসিদ্ধ। কবিতায় তিনি সাম্প্রদায়িকতা ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যেমন প্রতিবাদ করেছেন, তেমনি মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উজ্জীবিত মানুষকে প্রেরণা দিয়েছেন তার সৃষ্টিশীলতায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ ও ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ একইসঙ্গে পাঠক ও বোদ্ধাদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ও সমাদৃত।
কবিতা ছাড়াও উপন্যাস, ছড়া, প্রবন্ধ লেখার পাশাপাশি অনুবাদেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন শামসুর রাহমান। তার রচিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৬৬টি। উপন্যাস লিখেছেন চারটি। একটি করে রয়েছে প্রবন্ধ ও ছড়ার বই। অনুবাদ বইয়ের সংখ্যা ৬টি। সাহিত্যের জন্য স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কার, জীবনানন্দ পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন শামসুর রাহমান। রবীন্দ্রভারতী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সম্মানসূচক ডিলিট উপাধি দেয়া হয়।