ময়মনসিংহের শহরতলীর উইনারপড়ে অবস্থিত অন্যতম সেরা বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ‘কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ বাংলাদেশের’ ২৫বছর পূর্তি বা রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ও বিশেষ অতিথি সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদে বক্তব্যের সময় বিশাল প্যান্ডেল ছিল প্রায় ফাঁকা। অল্প কয়েকজন দর্শকের উপস্থিতিতে বক্তব্য শেষ করে অতিথিদ্বয়। অনুষ্ঠানে অনেকেই স্মরনিকা ও খাবার পায়নি। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে সিবিএমসি ২৫ বছর পূর্তিতে রজতজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। অনুষ্ঠান মঞ্চে শোভা পায়নি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো ছবি। আর রজতজয়ন্তী উপলক্ষে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগও উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিবিএমসির অধ্যক্ষ ডা. মির্জা মানজুরুল হক। এতে প্রধান ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু, জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান প্রমুখ।
জানা গেছে, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের অনেকেই স্মরনিকা ও খাবার পায়নি। অনেকেই না খেয়ে অনুষ্ঠান ত্যাগ করেছেন। স্থানীয়দের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রজতজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঁদাবাজি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ১৫০ জন চিকিৎসকের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে ও ৭০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে রেজিস্ট্রেশন ফি নেয়া হয়েছে। ১০টি ঔষধ কোম্পানির কাছ থেকে বিজ্ঞাপন ও অনুদান বাবদ নেয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। এই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম অধ্যক্ষ ডা. মোফাখারুল ইসলাম যথাযথ সম্মান দেয়া হয়নি। যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে সেই অজপাড়া গাঁয়ে মেডিকেল কলেজটি গড়ে তুলে ছিলেন। বড় করে তার একটি ছবি মঞ্চে ছিল না। এছাড়া মঞ্চে আশপাশে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার কোনো ছবি রাখা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অতিথি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অব্যস্থাপনার কারণে তিনি খাবার এবং স্মরনিকা পাননি। এদিকে প্রধান অতিথি বক্তব্যের সময় অজ্ঞাত কারণে অতিথি ও শিক্ষার্থী অধিকাংশ দর্শকসারি থেকে চলে যান। ফলে অনেক চেয়ার খালি দেখা যায়। অধ্যক্ষের একছত্র আধিপত্যের কারণে বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়েছে।
অনুষ্ঠান মঞ্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো ছবি শোভা পায়নি। বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল অবদান থাকলেও তাদের স্মৃতি উপেক্ষিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশেন ( বিএমএ) ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. এইচ এ গোলান্দাজ তারা।
এ ব্যাপারে সিবিএমসির অধ্যক্ষ ডা. মির্জা মানজুরুল হক মানজু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ১৫০ জন চিকিৎসকের কাছ থেকে ৩ তিন হাজার টাকা করে ও ৭০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে রেজিস্ট্রেশন ফি নেয়া হয়েছে। ১০টি ঔষধ কোম্পানির কাছ থেকে বিজ্ঞাপন ও অনুদান নেয়া হয়েছে। যথেষ্ট খাবার ছিল। কিন্ত অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকে খাবার পায়নি। স্মরনিকা কতগুলো ছাপা হয়েছে তা বলতে পারছি না। এলাকার লোকজনকে আমন্ত্রণ না জানানোয় আনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।