বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন কীভাবে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তদের কয়েক মাস পর্যন্ত ঘ্রাণশক্তি হ্রাস কিংবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ হারিয়ে যেতে পারে। তবে তারা বলেছেন, যে প্রক্রিয়ায় এই ঘ্রাণশক্তি হ্রাস পাচ্ছে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাতে চিরতরে ঘ্রাণেন্দ্রিয় ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা কম। একটু বেশি সময় লাগলেও একদিন ঘ্রাণশক্তি সে ফিরে পাবে।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল কলেজের একদল গবেষক বলেছেন, করোনায় আক্রান্তদের ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে যাবার বিষয়টি প্রথমদিকে ধরা পড়েনি। একটু বেশি মাত্রায় আক্রান্তরা হয়তো সাময়িক জড়তা বোধ করছেন এমনটা মনে করা হতো। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে সত্যিই করোনা রোগীদের এই ঘ্রাণ গ্রহণের শারীরিক প্রক্রিয়াটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা বলছেন, সংবেদনশীল যে নিউরন গন্ধ অনুভব করতে মস্তিষ্ককে সহায়তা করে সেটিকে করোনা ভাইরাস ধীরে ধীরে অসাড় করার কাজ করে। ফলে নাক দিয়ে ঘ্রাণ ভেতরে প্রবেশ করলেও আগের মতো সেটি অনুভব করতে পারে না। তবে তারা গবেষণায় দেখেছেন, করোনা ভাইরাসের দ্বারা স্থায়ীভাবে সরাসরি সংবেদনশীল নিউরনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। মূলত যে উপাদানটি নিউরনকে ঘ্রাণ অনুভব করতে সহায়তা করে, সেগুলো বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই উপাদানগুলো আবার নিজ থেকেই নিজেদের সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রাখে। একদম শুরু থেকে ঘ্রাণশক্তি গ্রহণের প্রক্রিয়া মেরামত করার দরকার পড়ে না শরীরযন্ত্রকে।
তাদের দাবি, বেশির ভাগ রোগী এক মাসের মধ্যে তাদের ঘ্রাণশক্তি পুরোপুরি ফিরে পায়। ক্ষেত্রবিশেষে কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর শারীরিক অন্যান্য দুর্বলতার কারণেও ঘ্রাণশক্তি হ্রাস পেতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদনটি সায়েন্স অ্যাডভান্সস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণাটির সিনিয়র লেখক নিউরোবায়োলজির সহযোগী অধ্যাপক ড. সন্দীপ রবার্ট লিখেছেন, আমি মনে করি এটি সুসংবাদ যে করোনার মতো জটিল ভাইরাসে আক্রান্ত হবার পর সংক্রমণ সেরে গেলেই পুরো প্রক্রিয়াটি মেরামতের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। রবার্ট ও তার সহকর্মীরা ইতালিতে কোভিডে আক্রান্ত কয়েক শ রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়েছেন। —সিএনএন