পটুয়াখালীর বাউফলে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে মাদরাসাছাত্রীর লাশ দাফনের সময় পাওয়া যায়নি ওই ছাত্রীর গ্রামবাসীকে। মৃতের গোসল ও জানাযা শেষে দাফন কার্য সম্পন্ন করেছে কেবল পরিবারের লোকজন। সোমবার (৬ এপ্রিল) উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের বটকাজল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত রাবেয়া (১২) বটকাজল গ্রামের প্রতিবন্ধী ফোরকান বাগার মেয়ে ও আদাবাড়িয়া ডিএস আলিম মাদরাসায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে জ্বর ও চর্মরোগে আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খায় রাবেয়া। অবস্থার অবনতি হলে রোববার বিকালে ফের ওই চিকিৎসকের কাছে গেলে তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন ওই চিকিৎসক। এরপর বাড়িতে এলে শরীর ফুঁলে ওঠে ও সোমবার সকালে মারা যায় সে।
এদিকে মুখে মুখে করোনা ভাইরাসে রাবেয়া মারা যাওয়ার খবর রটে গিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে। ভয়ে পরিবারের লোকজনদের সমবেদনা জানাতেও রাবেয়ার বাড়িতে আসেননি গ্রামবাসী কেউ। জানাযার নামাজ কিংবা লাশের গোসলের জন্য
পাওয়া যায়নি প্রতিবেশি কাউকে। অনেকটা নিরুপায় হয়ে পরিবারের লোকজনই গোসল দিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন তার।
এ ব্যাপারে রাবেয়ার মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুদ দাঈয়ান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘আমি কোনো শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর পাইনি। কোনো শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর পেলে সে করোনা ভাইরাসের কারণে মারা গেলেও বিশেষ প্রোটেকশন নিয়ে জানাযায় শরীক হতাম।’
এ ব্যাপারে নওমালা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জাহাঙ্গীর আকন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে জ্বর ও চর্মরোগে ভুগছিল সে। সোমবার সকালে সে মারা যায়। এরপর করোনা ভাইরাসের কারণে রাবেয়ার মৃত্যুর খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ভয়ে কেউ ওই বাড়িতে যায়নি। জানাযার নামাজ এবং দাফন কাফনেও কেউ অংশ নেয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘বিষয়টি এক সাংবাদিকের কাছে শুনেছি। যা মনে হয় সে করোনায় আক্রান্ত ছিল না। চর্মরোগের যথাযথ চিকিৎসাসেবা না পেয়ে তার মৃত্যু হতে পারে। এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে।’