নগর দরিদ্ররা সবচেয়ে অবহেলিত, অথচ তারাই নগর ও দেশের প্রতি সর্বোচ্চ দায়িত্বটা পালন করেন। এই করোনাকালের বাজেটে তাদের ভাগ্যে কিছুই রাখা হচ্ছে না। বরং নিম্ন আয়ের মানুষকেও ২০০ টাকা খরচ করে করোনা টেস্ট করাতে হবে। কিন্তু এ টাকা তারা কোথায় পাবে? করোনা যদি গরিবের রোগ হতে তবে এ বিষয়টিও সরকার গুরুত্ব দিতেন না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অনলাইন আলোচনায় বক্তারা।
নগর দারিদ্র, করোনা সংকট ও বাজেট ভাবনা শীর্ষক এক অনলাইল আলোচনা আজ ৩০ জুন স্ট্রিমইয়া এ অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) ও পরিবেশ বার্তার যৌথ উদ্যোগে বেলা ১২টায় অনুষ্ঠানটি লাইভ করা হয়।
আলোচনায় সভার কাপ এর চেয়ারম্যান ডা. দিবালোক সিংহ বলেন, নগর দরিদ্রদের জন্য এ বাজেটে কিছু রাখা হয়নি। করোনা কালের বাজেট হওয়া উচিত ছিল সকল মানুষদের কথা বিবেচনা করে। অথচ আমরা দেখলাম করোনা মোকাবেলায় রাখা হয়েছে মাত্র ২০ হাজার কোটি টাকা।
তিনি আরও বলেন, সরকার করোনা মোকাবেলায় কোনো সুস্পষ্ট বৈজ্ঞানিক কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করেননি। তাই তো সংক্রমণ কমার কোনো লক্ষণও আমরা দেখতে পাই না।
বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা যদি গরীবের রোগ হিসেবে পরিচিত পেতো তবে সরকার একে আর কোনো গুরুত্ব দিতেন না। আর এখন যেভাবে তারা কাজ করছেন আমাদের সামনে ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে হয়তো।
তিনি আরও বলেন, নগরের নিম্ন আয়ের মানুষরা কিভাবে কয়েকশত টাকা খরচ করে করোনা টেস্ট করাবেন যেখানে তাদের ২ বেলা খাবার জোটানোই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপীই আজ আমাদের সামনে একটাই বার্তা প্রাণ প্রকৃতি ও মানুষকে একসাথে বাঁচতে শিখতে হবে কারণ এধরনের মহামারি আরও আসবে বলে ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা ঘোষণাই করে দিয়েছেন।
অধ্যাপক দেবাশীষ কুন্ডু বলেন, রাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালন করছেন না। তাহলে এখনো কেন সে বেসরকারি উদ্যোগের দিকে চেয়ে থাকবেন। তিনি বলেন, সরকারের উচিত এসকল লোকদেখানো কথা ও কাজ বন্ধ করে প্রকৃত অর্থে মানুষকে বাচাঁনোর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
বিশিষ্ট সাংবাদিক আলমগীর স্বপন বলেন, নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের পরিস্থিতি সত্যিই খুবই খারাপ । সরকারের উচিত এই মানুষদের রক্ষা করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
আলোচনা সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন নগর গবেষখ ও বারসিক সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম। আরও আলোচনা করেন কাপ এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান ইয়াত, বারসিকের গবেষক সুদিপ্তা কর্মকার, বস্তিবাসী নেত্রী রাফেজা বেগম প্রমুখ। আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন নগর গবেষক ও পরিবেশ বার্তার সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল।