করোনা : বিনা খরচে বিদেশে আটকা পড়াদের আনবে না সরকার - দৈনিকশিক্ষা

করোনা : বিনা খরচে বিদেশে আটকা পড়াদের আনবে না সরকার

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দেশে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের তালিকা করলেও তাদের বিনা খরচে দেশে ফিরিয়ে আনবে না সরকার। কিভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় ও কোন এয়ারলাইন্সে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে সে নিয়ে এখন রীতিমতো দরকষাকষি করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারপরেও ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে বলেছেন, ‘প্øিজ প্রধানমন্ত্রী কিছু করুন।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব খবর জানা গেছে। শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন অভিজিৎ ভট্টাচার্য । 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি আটকে পড়েছেন। এরমধ্যে কর্ণাটক, চেন্নাই, পশ্চিমবঙ্গে আছেন প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশি। বাকিরা অন্যান্য রাজ্যে। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরেও বহু বাংলাদেশি আটকে আছেন। তবে দেশ দুটিতে কত সংখ্যক বাংলাদেশি আটকা তার সঠিক পরিসংখ্যান এখনো জানতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারাও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে ফিরে আসতে চান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, এসব দেশে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের তালিকা করছে বাংলাদেশ দূতাবাস। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশিদের এই মুহূর্তে ফিরিয়ে আনা যাবে না। দেশ দুটি কোনো ফ্লাইট ছাড় না দেয়ায় আপাতত তাদেরকে সেখানেই থাকতে হবে। তবে ভারতে আটকেপড়াদের ফিরিয়ে আনতে আলোচনা চলছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট প্রস্তুত করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ফ্লাইটের সব খরচ আটকেপড়া বাংলাদেশিদের দিতে হবে। কিন্তু তাদের একাংশ সরকারের এই শর্তে রাজি হচ্ছেন না। এতে ফিরে আসার ব্যাপারে আলোচনাও থেমে আছে।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ভোরের কাগজকে বলেন, বিমানের ফ্লাইটের পয়সা দিলে ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলে আটকেপড়াদের বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ফিরিয়ে আনা হবে। সম্পূর্ণ লকডাউন থাকায় মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকে কাউকে আনা যাবে না। তবে যারাই ফিরে আসবেন তাদেরকে বাংলাদেশে ঢোকার পর থেকে অবশ্যই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

সিঙ্গাপুরে আটকেপড়াদের যোগাযোগ করার অনুরোধ দূতাবাসের : সিঙ্গাপুরে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের সেখানকার বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় কিছু বাংলাদেশি নাগরিক আটকে পড়েছেন বা দেশে পৌঁছাতে পারছেন না বলে হাইকমিশন অবগত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের বিবেচনার্থে আটকেপড়া বা দেশে ফিরতে আগ্রহী ব্যক্তিদের সংখ্যা জানা প্রয়োজন। ‘আগ্রহী নাগরিকদের বর্তমান ঠিকানা, স্থানীয় টেলিফোন নম্বর ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ করে হাইকমিশনের ই-মেইলে (সরংংরড়হ.ংরহমধঢ়ড়ৎব@সড়ভধ.মড়া.নফ) যোগাযোগের অনুরোধ করা হলো।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফেরার আকুতি চেন্নাইয়ে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের : ভারতের তামিলনাড়– রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বাংলাদেশিরা। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করায় সেখানে প্রায় দুশো বাংলাদেশি আটকে পড়েছেন। এদের কারো কারো চিকিৎসা শেষ হয়েছে। আবার কারো মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের আবার সেখানে থাকার আর্থিক সক্ষমতা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে অঘোষিত লকডাউনের কারণে দেশে আসতে পারছেন না তারা। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্য চেয়েছেন তারা।

চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতাল, শংকর নেত্রালয়, ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ও গ্লোবাল হাসপাতাল বাংলাদেশিদের কাছে খুব জনপ্রিয়। জান্নাতুল ইসলামের নামের একজন বলেন, চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে আমিসহ আশপাশে অনেক বাংলাদেশির চিকিৎসা শেষ হলেও আটকে আছি। বর্তমানে টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় খাবার পানি পর্যন্ত পাচ্ছি না। বাকিটা বুঝতেই পারছেন। বাংলাদেশ থেকে টাকা আনতে পারছি না। কী করব বুঝতেছি না। আটকেপড়া দিনাজপুরের অধিবাসী ফারহানা বিলকিস কামাল তার মায়ের চিকিৎসার জন্য চেন্নাই গেছেন। সেখানকার নিউরোলজিস্ট বলেছেন, তার মায়ের মস্তিষ্কের পেছনের দিকের নার্ভ শুকিয়ে গেছে। উনি কখনো আর স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারবেন না। কিন্তু সেখানে অচল মাকে নিয়ে আটকা ফারহানা অথৈ সাগরে পড়েছেন। তিনি বলেন, অচল মাকে সামলানো ছাড়াও রান্নাবান্না করতে হয়। বাজারে যেতে হয়। কিন্তু এই অবস্থায় দেশেও ফিরতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আকুল আবেদন, তিনি যেন আমাদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করেন।

মোস্তাকিম অলিভ নামের আরেকজন জানান, লকডাউনে পড়ে অবস্থা কাহিল হয়ে গেছে। দেশ থেকে টাকাও আনতে পারছি না। এখানে দোকানপাটও বন্ধ। খাবার-দাবারও তেমন নেই। হোটেল মালিক ভাড়া কমাতে চায় না। এমতাবস্থায় কী করব বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করলে তারা বলছে অপেক্ষা করতে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? আমরা বাংলাদেশের প্রশাসন থেকে সাহায্য চাই, আমাদের দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন দয়া করে। প্লিজ প্রধানমন্ত্রী কিছু করুন।

এর আগে, গত ২৯ মার্চ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফেসবুকে লিখেছিলেন, ভারতে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ। আমরা শুনতে পাচ্ছি চিকিৎসা নিতে গিয়ে সেখানে কিছু বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন। সেখানে থাকতে তাদের অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের দূতাবাস ইতোমধ্যে একটি প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করেছে। পূর্ণ তালিকা পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে। আমরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাব। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যেন তাদের চাহিদার বিষয়গুলো দেখভাল করেন।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0084390640258789