করোনা : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় আতঙ্কে অভিভাবকরা - দৈনিকশিক্ষা

করোনা : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় আতঙ্কে অভিভাবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় অধিকাংশ দেশ প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গে সব স্কুল-কলেজ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।  এছাড়া উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরাখন্ডের বিভিন্ন স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানে সিন্ধু প্রদেশের স্কুলগুলো ৩০ তারিখ পর্যন্ত ছুটি বাড়িয়েছে সরকার। শ্রীলঙ্কায় ১৩ মার্চ থেকে সব স্কুল বন্ধ করে দেয় সরকার। নেপালেও স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা জারি করায় অন্তত ১২টি অঙ্গরাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ব্রাজিলে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলেও বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি।

অনেক অভিভাবক ইতিমধ্যে নিজ উদ্যোগেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। এ কারণে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে যাচ্ছে।

অভিভাবকরা বলছেন, স্কুল-কলেজগুলো বন্ধ না করে সরকার এখন কী দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ার পর বন্ধ করা হবে? তারা বলছেন, কোনো স্কুলে যদি করোনা আক্রান্ত একজনকেও পাওয়া যায় তাহলে কোয়ারেন্টাইনে যেতে হবে স্কুলের প্রায় সবাইকে। ছোটো ছোটো শিশুদের কীভাবে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হবে। তারা কী বাবা-মা ছাড়া একা থাকতে রাজি হবে। হোম কোয়ারেন্টাইনও কি শিশুদের দিয়ে সম্ভব হবে?

সরকার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে স্কুল বন্ধ না করে অ্যাসেম্বলি মাঠে না করে শ্রেণিকক্ষে আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে একটি সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। এমন বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও।

অভিভাবকরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের রোগ প্রতিরোধে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে স্কুলের চেয়ে জনসমাগম আর কোথায় বেশি হয়। স্কুলে প্রবেশ এবং ছুটি হবার সময় বের হতে গিয়ে স্কুলের ছোটো গেট দিয়ে একে অপরের সংস্পর্শে সবচেয়ে বেশি আসে। ছোট্ট একটি ক্লাসরুমে ৭০ থেকে ৯০ জন শিক্ষার্থী চার-পাঁচ ঘণ্টা অবস্থান করে। শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে একটি বেঞ্চে চার-পাঁচ বা ছয় জন পর্যন্ত গাদাগাদি করে বসে। ফলে কোনো শিক্ষার্থী ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তা অন্য শিক্ষার্থীর মধ্যে ছড়নোর আশঙ্কা থাকে।

স্কুল ছাড়াও আতঙ্কে রয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। তারা গণপরিবহনে চড়ে আসে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় স্বাস্থ?্যবিভাগের নির্দেশনা পালন করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আবাসিক হলে প্রতিটি কক্ষে চার-পাঁচ জন করে থাকে । গণরুমে থাকে ৩০ থেকে ৪০ জন। ফলে একজন অসুস্থ হয়ে পড়লেও অন্য সবার অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

অন্যদিকে স্কুল-কলেজ বন্ধের বিষয়ে গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, স্কুল-কলেজ বন্ধের একটা দাবি এসেছে। এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে চিন্তাভাবনা নেই, এমনটা নয়। আমাদের এখানে বিষয়টা সেই পর্যায়ে আসেনি, নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার খবর পাইনি। আমাদের এখানে বিষয়টি যদি খারাপভাবে মোড় নেয় বা স্কুল-কলেজ বন্ধ করার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে অবশ্যই সেটা করা হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে করোনা ভাইরাস থেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রাখতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। শিক্ষকদের মাধ্যমে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে। আতঙ্ক না ছড়িয়ে সবাইকে সচেতন করে তুলতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপ হিসেবে বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি, গ্রিস, পর্তুগালসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস আনাস্তাসিয়াডিস ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

 

আরও পড়ুন : 

আরও ২ জন করোনায় আক্রান্ত

করোনা : সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে আইসোলেশনে থাকবেন যেভাবে

করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি : আইইডিসিআর

মাস্কের দাম বেশি চাইলে কল করুন এই নম্বরে

করোনা ভাইরাস : মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়ালো

‘চীনে করোনা আক্রান্তদের ৭০ ভাগই সুস্থ’

করোনা : জীবাণু প্রতিরোধী পণ্যের মূল্য নির্ধারণ

করোনা : যেসব ভুয়া স্বাস্থ্য পরামর্শ এড়িয়ে চলবেন

করোনা : কি করব-কি করব না, সঠিক তথ্য কোথায় পাবো?

করোনা সম্পর্কে জানতে হটলাইন নম্বর

বাংলাদেশে তিন করোনা রোগী শনাক্ত

করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৫ পরামর্শ

করোনার ঘোষণা দাও, অনুষ্ঠান পরে, আমি তোমাদের সাথে আছি : প্রধানমন্ত্রী

লাগবেনা মাস্ক, ৭টি বিষয় মানলেই কমবে করোনার ঝুঁকি

করোনা ভাইরাস : বুঝবেন কীভাবে, যাবেন কোথায়?

করোনায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ২৫ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ : মার্কিন দূতাবাস

করোনা ভাইরাসে প্রথম বাংলাদেশির মৃত্যু যুক্তরাজ্যে

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048708915710449