করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেই তড়িঘড়ি করে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে খুলনার রূপসা উপজেলার আজোপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি সভাপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার ঠিক কয়েকদিন আগে আগামী শনিবার (২৭ জুন) সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তড়িঘড়ি করে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা করা। আর এ নিয়োগের কলকাঠি নাড়ছেন প্রধান শিক্ষক যশোবন্ত ধর।
অভিযোগ উঠেছে, প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে ঘুষ বাবদ দেয়া আট লাখ টাকা তুলতেই এ অপতৎপরতা চালাচ্ছেন তিনি। নিয়মিত প্রতিষ্ঠান প্রধান থাকার পরও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে তড়িঘড়ি করার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
যদিও প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিজ্ঞপ্তি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার উদ্দেশ্যেই আগামী ২৭ জুন পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। নিয়োগে লেনদেন হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তারা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, আগামী ৭ জুলাই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আইয়ুব আলী বাবুর মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর আগেই তড়িঘড়ি করে ২৭ জুন নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। অন্যান্য জেলা থেকে কয়েকজন প্রার্থী আবেদন করলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তারা নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। সে সুযোগে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে সহজে নিয়োগ দেয়ার উদ্দেশ্যেই তড়িঘড়ি করে করোনাকালে নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক যশোবন্ত ধর নিয়োগের মূল কলকাঠি নাড়ছেন। নিয়মিত প্রতিষ্ঠান প্রধান থাকার পরও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে কেন এত তৎপরতা তা সহজেই বোঝা যায়।
স্থানীয় একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ৮ লাখ টাকা ঘূষ দিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন যশোবন্ত ধর। সে টাকা তুলতেই টাকার বিনিময়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের তৎপরতা শুরু করেছেন তিনি। তাই সভাপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন প্রধান শিক্ষক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষক যশোবন্ত ধর অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে একটি স্থানীয় পত্রিকায়। ছয় মাসে বিজ্ঞপ্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তাই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এ পরীক্ষায় কোন লেনদেন হচ্ছে না। এ সময় নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু তথ্য চাইলে হঠাৎ রেগে গিয়ে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান প্রধান শিক্ষক।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত সভাপতি আয়োজনই বাবুর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
রুপসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আইরিন পারভীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আসলে তড়িঘড়ি করে যে নিয়োগ প্রক্রিয়াটা শেষ করা হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে এখনো জানি না। তারা প্রায় ১৫ দিন আগে আমাদের কাছ থেকে পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করে নিয়েছেন। তবে প্রার্থীদের কবে জানিয়েছেন তা আমি সঠিক বলতে পারছি না। কমিটির মেয়াদ শেষ হবে সামনেই এ বিষয়টি জানি। আর তারা বেশ কিছু দিন আগেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলেন।