করোনার প্রভাবে হুমকির মুখে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা - দৈনিকশিক্ষা

করোনার প্রভাবে হুমকির মুখে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে স্থগিত করা হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিটি পরীক্ষা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম সায়মিক পরীক্ষাও স্থগিত হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার ফলও প্রকাশ করা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সেমিস্টার ফাইনালও আটকে আছে। ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থা একযোগে হুমকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় করণীয় ঠিক করতে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বুধবার (২২ এপ্রিল) কালের কণ্ঠ প্রতিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন শরীফুল আলম সুমন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, আন্তর্জাতিকভাবে পরিচালিত হয় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পড়ালেখা এবং সারা বিশ্বে একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় পরীক্ষা। করোনা প্রাদুর্ভাবের বর্তমান পরিস্থিতিতে অ্যাডেক্সেল ও ক্যামব্রিজের অধীনে চলতি বছরের মে-জুনে্র ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী জুনে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষাও প্রয়োজনে অনলাইনেই গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির আবহে দেশে জাতীয় কারিকুলামের অধীনে পরিচালিত শিক্ষাব্যবস্থার করণীয় ঠিক করতে কাজ শুরু করেছে দুই মন্ত্রণালয়। তবে কবে নাগাদ করোনার প্রাদুর্ভাব কমবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা সম্ভব হবে, সেটাই বুঝতে পারছেন না মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ জন্য আপাতত যেভাবে টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার করা হচ্ছে সেভাবেই পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চান তাঁরা। এরপর ঈদ পর্যন্ত দেখে করণীয় চূড়ান্ত করা হবে। তবে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা এবং সিলেবাস কিছুটা সংক্ষিপ্ত করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, করোনায় প্রাথমিক শিক্ষার জন্য করণীয় ঠিক করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেনকে চেয়ারম্যান এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের হেড অব এডুকেশনকে কো-চেয়ারম্যান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এ কমিটি তিনটি ভার্চুয়াল মিটিং করেছে। গণশিক্ষাসচিব  বলেন, ‘টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু শতভাগ শিক্ষার্থীর পক্ষে এই ক্লাস দেখা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য আমরা অভিভাবকদের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে পড়ালেখার আদান-প্রদান শুরু করতে যাচ্ছি। এতে অন্তত কী পড়তে হবে তা জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া নিজ নিজ শিক্ষকদেরও আমরা খোঁজখবর রাখতে বলেছি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে ক্ষতি নিরূপণ ও রিকভারি প্ল্যান তৈরি করতে বলা হয়েছে। ঈদের পর স্কুল খুললে অতিরিক্ত ক্লাসেরও ব্যবস্থা করা হবে।’ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন  বলেন, ‘আমরা আরো কিছুদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে চাই। এরপর শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষাতে যা যা করার দরকার তার সবই মন্ত্রণালয় থেকে করা হবে।’

দেশের নামিদামি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর বেশির ভাগেই চলছে অনলাইনে পড়ালেখা। তবে যেসব স্কুল এখনো অনলাইনে যেতে পারেনি, তারা পিছিয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও গ্রিন জেমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ ড. জি এম নিজাম উদ্দিন  বলেন, ‘আগামী মে-জুনের ও এবং এ লেভেল পরীক্ষা এবার হবে না। এর পরিবর্তে স্কুল বেসড অ্যাসেসমেন্ট করা হবে। শিক্ষার্থীরা সারা বছর যে পড়ালেখা করছে এর ওপর নিজ নিজ স্কুল তাদের মূল্যায়ন করে গ্রেড দেবে। এরপর সেটা পাঠানো হবে ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষা বোর্ডে। সেখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ডাটা রয়েছে। স্কুলের

আগের বছরগুলোর ফল রয়েছে। সব কিছু অ্যানালাইসিস করে ইন্টারন্যাশনাল বোর্ড প্রত্যেক শিক্ষার্থীর গ্রেড ঠিক করবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর প্রত্যেক শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষাও আগামী জুনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে সেটাও এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। তবে বেশির ভাগ স্কুল অনলাইনে গুগলের মাধ্যমে লাইভ ক্লাস নিচ্ছে, হোম ওয়ার্ক, অ্যাসাইনমেন্ট দিচ্ছে। সেটার একটি মূল্যায়ন হতে পারে। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে প্রয়োজনে অনেক স্কুলই অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণেরও প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে যেসব স্কুল এখনো প্রযুক্তিতে দক্ষ নয়, তাদের নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে।’

উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘আরো কত দিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে, কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা আগে নিরূপণ করতে হবে। তবে সহসা বিশ্ববিদ্যালয় খুললে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে ক্ষতি পোষানো যেতে পারে। কিন্তু ক্লাস না নিয়ে, সময় না দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট একেবারে কমে এসেছিল, এখন সেটা বেড়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে একাডেমিক কাউন্সিল বসে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এখন বলব, আগে জীবন বাঁচাতে হবে। এ জন্য সবাইকে ঘরে থাকতে হবে।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041899681091309