করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী গীতা রামজি মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্ববাসী। সব মৃত্যুই মানুষকে ব্যথিত করে। কিন্তু গীতা রামজির মৃত্যু বিশ্বকে আরও বেশি ব্যথিত করেছে। কারণ, তিনি আরেক মরণব্যাধি এইডস সৃষ্টিকারী এইচআইভি বিষয়ক দক্ষিণ আফ্রিকার শীর্ষ বিজ্ঞানী। বিবিসি বাংলাকে তার সহকর্মী ও বন্ধু গাভিন চার্চইয়ার্ড বলেছেন, নারীদের জন্য এইচআইভি প্রতিরোধ বিষয়ক সমাধান বের করার জন্য তিনি তার জীবনের বহু বছর উৎসর্গ করে গেছেন।
ইউএনএইডস-এর উইনি বাইয়ানিমা বলেছেন, প্রফেসর রামজির মৃত্য এ সময়ের একটি বিরাট ক্ষতি, যখন বিশ্বে তার খুব বেশি প্রয়োজন। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি লিখেছে, এইচআইভিতে বিশ্বে যত মানুষ আক্রান্ত তার মধ্যে বিপুল সংখ্যক দক্ষিণ আফ্রিকায়।
সেখানে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে তিন সপ্তাহে লকডাউন শুরু হয়েছে। ডেপুটি প্রেসিডেন্ট ডেভিড মাবুজা এক বিবৃতিতে বলেছেন, পুরো স্বাস্থ্য খাত এবং বিশ্বে এইচআইভি/এইডসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই সময়ে প্রফেসর রামজির চলে যাওয়া একটি বড় আঘাত। বৈশ্বিক এইচআইভি মহামারির বিরুদ্ধে একজন চ্যাম্পিয়নকে হারিয়েছি আমরা, বিশেষ করে এই বৈশ্বিক মহামারির সময়ে। তাকে অনুসরণ করে আমাদের উচিত হবে নতুন এইচআইভি সংক্রমণ শূন্যতে নামিয়ে আনা।
মঙ্গলবার উপকূলীয় শহর ডারবানের কাছে একটি হাসপাতালে মারা যান প্রফেসর রামজি। তিনি এইচআইভি এবং টিবি বা যক্ষার বিরুদ্ধে শীর্ষ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অরাম ইনস্টিটিউটে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছিলেন। তার সম্পর্কে অরামের প্রধান প্রফেসর চার্চইয়ার্ড বলেছেন, আমি তাকে বহু বছর ধরে চিনি। তিনি একজন গতিশীল এবং প্রকৃত যোদ্ধা নারী। তিনি যদি কোনো কিছুতে মনোনিবেশ করেন, তার চেয়ে ভাল অন্য কেউ করতে পারবে না।
এইচআইভির এই গবেষক মধ্য মার্চে বৃটেন থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা যান। এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনে একটি সিম্পোজিয়ামে তার বক্তব্য উপস্থাপন করতে বৃটেন গিয়েছিলেন। সেখানে সম্মানসূচক প্রফেসরশিপ রয়েছে তার। তার একই স্বীকৃতি রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন এবং ইউনিভার্সিটি অব কেপটাইনে। দু’বছর আগে তাকে দেয়া হয় আউটস্ট্যান্ডিং ফিমেল সায়েন্টিস্ট এওয়ার্ড। এ সম্মাননা তাকে দেয় ইউরোপিয়ান ডেভেলপমেন্ট ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস পার্টনারশিপস।