করোনায় শিক্ষা সংকটে জর্জরিত মেক্সিকোর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী - দৈনিকশিক্ষা

করোনায় শিক্ষা সংকটে জর্জরিত মেক্সিকোর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আগে থেকেই নানাভাবে বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছে দক্ষিণ মেক্সিকোর দারিদ্র্যপীড়িত পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ। জাতিসত্তার স্বকীয়তা বজায় রেখে বেঁচে থাকার সংগ্রাম তাদের দীর্ঘদিনের। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাস তাদের এ সংগ্রামকে আরো কঠিন করে তুলেছে। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সরঞ্জামের অভাবে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ছে তাদের শিশুরা। খবর এএফপি।

গত মাসে টেলিভিশনের মাধ্যমে দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে মেক্সিকোয় শুরু করা হয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। কিন্তু দেশটির পার্বত্যাঞ্চলের শিশুদের কাছে ইন্টারনেট কিংবা টেলিভিশন এখনো স্বপ্নের মতো।

কিন্তু ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই এসব শিশু শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। এ বিষয়ে সান মিগুয়েল আমোলতেপেক ভিয়েজো গ্রামের এক শিক্ষক জেমি আরিয়াগা বলেন, এখানে কোনো কম্পিউটার নেই, নেই টেলিভিশনের সিগন্যাল। তাছাড়া বৃষ্টি হলেই এখনো বিদ্যুৎ চলে যায়।

স্বাভাবিক সময়ে যখন আরিয়াগা সরাসরি শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতেন তখন তিনি এ প্রত্যন্ত এলাকাতেই পুরো সপ্তাহ অবস্থান করতেন। কারণ অঞ্চলটির প্রধান শহর টিলাপায় যেতে গাড়িতে ২ ঘণ্টা সময় লাগে। তাছাড়া এ পথও বেশ দুর্গম। এ অবস্থায় ৩৩ বছর বয়সী এ শিক্ষক বর্তমানে শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষা উপকরণ পৌঁছে দিচ্ছেন। 

একই সঙ্গে দেখা করছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

আরিয়াগা যে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতেন, সেটি এখন একটি গুদামঘরে পরিণত হয়েছে। অথচ মহামারীর আগে এখানেই তিনি ২২ জন শিক্ষার্থীকে পড়াতেন। সেলসো সান্দিয়াগো নামে এক কৃষক বলেন, তার তিন সন্তান এখন বাড়িতেই মাটিতে বসে পড়াশোনা করছে। কিন্তু জরাজীর্ণ ঘরে সত্যিকার অর্থে পড়াশোনার ভালো পরিবেশ নেই। তার পরও তিনি চাচ্ছেন, যেন তার সন্তানরা পিছিয়ে না পড়ে। কিন্তু তার শঙ্কা, হয়তো এভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। সেলসো বলেন, আমাকে জীবিকার জন্য সারাদিন কাজ করতে হয়। ফলে আমার পক্ষে সন্তানদের খেয়াল রাখা সম্ভব হয় না। এখন তাদের শিক্ষকরা যা পড়াচ্ছেন তা তারা শিখতে না পারলে পিছিয়ে তো পড়তেই হবে। মূলত মহামারী সব দিক থেকে আমাদের সংকট আরো গভীরতর করেছে। তাছাড়া এ অঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও শিক্ষার হার খুবই কম। পড়তে ও লিখতে না পারার কারণে তারাও শিশুদের ঘরে বসে পাঠদানে সক্ষম নয়। মূলত আমরা এমন এক এলাকায় বাস করি, যেখানে আধুনিক সমাজের অধিকাংশ সুযোগ-সুবিধা নেই।

প্রকৃতপক্ষে মেক্সিকোর দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে। কোচোয়াপা এল গ্রান্দে মিউনিসিপ্যালিটির (সান মিগুয়েল আমোলতেপেক যার অংশ) ৮২ শতাংশ অধিবাসীই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাসিন্দা। যাদের অধিকাংশই প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করতে পারেন না। সান মিগুয়েল আমোলতেপেকে যে ২০০ মানুষ বসবাস করেন, তাদের অধিকাংশকেই কাজের জন্য উত্তর মেক্সিকো কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী এলাকায় যেতে হয়। ফলে তাদের বহু ঘর একভাবে ফাঁকাই পড়ে থাকে।

তবে আশার কথা হলো, চিকিৎসা কেন্দ্রের অভাবে করোনার উচ্চঝুঁকি থাকলেও এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলে ব্যাপক হারে সংক্রমণ দেখা দেয়নি। সব মিলিয়ে মেক্সিকোয় সাড়ে আট হাজারের বেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১ হাজার ২৪০ জনের বেশি। আর কোচোয়াপা এল গ্রান্দেতে আক্রান্ত হয়েছে মাত্র দুজন। কেউ মারা যায়নি।

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039870738983154