করোনা সংকট মোকাবেলায় শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম কোনো ভূমিকাই পালন করতে পারেনি- এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব সংগঠনের পক্ষ থেকে এই অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪২ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকাংশই আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের। অনেক শিক্ষার্থীই টিউশনি করে সৎ পথে জীবনযাপন করে থাকেন। বিগত প্রায় আড়াই মাস যাবত করোনা সংকট চলছে।”
‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ অবধি করোনা সংকট মোকাবিলায় কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেনি। উপরন্তু তারা প্রধানমন্ত্রীর যে ত্রাণ ফান্ড রয়েছে সেখানে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। এই অনুদান দেয়া কোনোভাবেই ঠিক কাজ হয়নি। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।”
একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে চালু হওয়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে তা চালুর দাবি জানিয়েছেন রাকিব।
নয়াপল্টনে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব মো. আমান উল্লাহ আমান।
২৯ মার্চ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত ক্যাম্পাস ও তার আশপাশে ত্রাণ-বিতরণ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর্থিক সহযোগিতার কার্যক্রম তুলে ধরে আমান বলেন, ‘‘এক হাজার অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। তিন শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থীদের আমরা আর্থিক সহযোগিতাও করেছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ভেতর দিয়ে মেট্রো রেলপখ ও স্টেশন স্থাপন বাতিলের দাবি পূণর্বিবেচনা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক বলেন, ‘‘আমরা ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে মেট্রো রেলপথ ও স্টেশন নেয়ার বিষয়টি ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করি। যেভাবে এই মেট্রোরেল পথ নেয়ার জন্য ইতিমধ্যে টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত অনেক পুরোনো শতবর্ষের গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভুতিতে আঘাত করেছে।”
‘‘আমরা আবারও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি বিষয়টি পূণর্বিবেচনা করার জন্য। আর যেন একটি গাছও কাটা না হয়।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনলাইস ক্লাস চালুর পরিকল্পনা প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘অনলাইন ক্লাসের বিষয়ে ভিসি স্যারের নেতৃত্বে একটি কমিটি হয়েছে। দ্রুত তারা একটা সিদ্ধান্ত নেবেন।”
‘‘আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, অনলাইন ক্লাস যদি চালু করা হয় সেজন্য অবকাঠামো ঠিক করে যেন তা চালু করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য যেন অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়। বিশেষ করে অ্যানড্রয়েড মোবাইল সেট কেনা... সেটা যেন দেখা হয়। সব শিক্ষার্থীদের তো প্রয়োজন নেই, যাদের প্রয়োজন তারা যেন এই সহযোগিতা নিয়ে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারে।”
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন উপস্থিত ছিলেন।