বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে মানুষ কর্মহীন ও অসহায় হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে দেশে লকডাউন চলায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষ গৃহে অন্তরীণ থেকে এক দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন।
দেশের প্রায় কয়েকশ এমপিওভুক্ত (উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি) কলেজে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে আবশ্যিক বিষয়ে ১ জন করে নন-এমপিও প্রদর্শক (শিক্ষক-শিক্ষিকা) আছেন। এসব নন-এমপিও আইসিটি প্রদর্শকরা দীর্ঘদিন ধরে পেশাগত নানাবিধ বৈষম্যের শিকার। দীর্ঘ ১৪/১৫ বছর যাবত কর্মরত থাকলেও তাদের এমপিও হয়নি। ফলে এসব শিক্ষকদের পক্ষে সন্তানদের শিক্ষা নির্বাহ, দৈনন্দিন ব্যয়, চিকিৎসা ব্যয়, পিতা-মাতাসহ পরিবারের অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে দেশের নাগরিক হিসেবে প্রণোদনা পাওয়ার অধিকার থাকলেও বর্তমান সময়ে গৃহবন্দি এসব নন-এমপিও আইসিটি প্রদর্শকরা সরকারি সহযোগিতাও চাইতে পারছেন না।
বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট নিবেদন, নন-এমপিও আইসিটি প্রদর্শকদের প্রতি সদয় দৃষ্টি দেবেন। এসব শিক্ষকদের যোগদানের সময় রাষ্ট্রীয় তফশিল ব্যাংকে ব্যক্তিগত হিসাব ও নম্বর খোলা আছে। দয়া করে সেখানে সরকারি সহযোগিতার ব্যবস্থা করুন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ১৪/১৫ বছর যাবত এমপিওভুক্ত কলেজে কর্মরত নন-এমপিও এসব আইসিটি প্রদর্শকদের দ্রুত এমপিওভুক্ত করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) নির্দেশ দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশের সব এমপিও ও নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীকে ডিজিটাল রেশন কার্ড প্রদান করা হোক। দেশের এমন এক ক্রান্তিকালে জাতি বিনির্মাণের নিপুণ কারিগর এবং সমাজের সবচেয়ে সম্মানিত পেশায় নিয়োজিত শিক্ষক সমাজের এমন করুণ চিত্র আজ সর্বত্র। যারা জীবন যৌবন উৎসর্গ করে জাতিগঠনে নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছেন, সেই শিক্ষকদের সুখ-দুঃখ প্রকাশের নেই কোনো নির্ভরশীল অভিভাবক। শুধুমাত্র কাগজেপত্রে শিক্ষকদের সম্মান মর্যাদা দিলেই তা যথেষ্ট হয় না। এ বোধ সকলের জাগ্রত হোক সেই প্রত্যাশা রইলো।
লেখক : মো. রুহুল আমিন, প্রদর্শক, আইসিটি (নন-এমপিও), আদমদীঘি পাইলট বালিকা বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়, আদমদীঘি, বগুড়া।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন।]