কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটেছেন প্রধান শিক্ষক! - দৈনিকশিক্ষা

কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটেছেন প্রধান শিক্ষক!

শরীয়তপুর প্রতিনিধি |

শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৮ নং স্বর্ণঘোষ টাউন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই লক্ষাধিক টাকা মূল্যমানের গাছ কেটে আংশিক বিক্রি করেছেন। বিষয়টি এলাকাবাসী গণমাধ্যম কর্মীদের অবগত করেন।

ঘটনার সত্যতা যাচাই করে গণমাধ্যম কর্মীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করলে তারা তাৎক্ষনিক বিদ্যালয়ে আসেন। কর্তৃপক্ষ প্রথমে কেটে ফেলা গাছের গুড়িগুলো পরিমাপ শেষে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করে তদন্ত কমিটি গঠন ও প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শাতে নির্দেশ প্রদান করেন। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ (এসএমসি) ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে গাছ কেটেছেন বলে দাবী করেছেন। তবে প্রধান শিক্ষক অনুমতির কোন প্রমাণ দেখাতে পারে নাই।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক, এসএমসি ও এলাকাবাসী জানায়, হোসনে আরা খানম বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে চার বছর পূর্বে যোগদান করেছেন। যোগদানের পর আরও দুইবার গাছের ডালপালা কেটে বিক্রি করেছেন। তখন এলাকাবাসী বিষয়টি তুচ্ছ মনে করেছেন। এবার তিনি ৪৬ জন শ্রমিক দিয়ে বিদ্যালয় বাউন্ডারির ভিতরে থাকা ৬০ বছরের ঐতিহ্য বহনকারী রেইনট্রি, মেহগানিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলেন। ইতোমধ্যে লাকরি হিসেবে ১৬৪ মণ বিক্রি করেছেন। ১০ ফিট দৈর্ঘ ও ৬ ফিট প্রস্থের ৫২টি গাছের গুড়ি বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে জব্দ করেছেন কর্তৃপক্ষ।

প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা খানম বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে ও বিদ্যালয় ভবনের ছাদে গাছের পাতা পরে নষ্ট করে। তাই এসএমসির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে গাছ কেটেছি। 

কালের স্বাক্ষী ৮২ বছর বয়সী স্থানীয় গিয়াস উদ্দিন খান, জাহেদ আলী খান ও মুক্তিযোদ্ধা শফিজদ্দিন ছৈয়াল বলেন, গাছ কাটতে দেখে প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চাই। প্রধান শিক্ষক বলেন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই গাছ কেটেছেন। তখন আমাদের আর কি করার থাকে। পরে জানতে পারি গাছ কাটতে কোন অনুমতি নেয়া হয় নাই। 

বিদ্যালয়ের সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়া  বলেন, আমাকে গাছ কাটর ব্যাপারে কিছু জানায় নাই। আমি এসে দেখি গাছ কেটে ফেলেছে এতে পরিবেশে প্রভাব ফেলতে পারে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে আইনের আওতায় আনা উচিৎ। গাছ কেটে তিনি ভাল কাজ করেনি।

দায়িত্বরত সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হামিদুল হক বলেন, আমি একদিন বিদ্যালয়ে এসে দেখি গাছ কাটছে। তখন প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চাই। প্রধান শিক্ষক জানায় ইউএনও স্যার গাছ কাটতে অনুমতি দিয়েছে। আমিতো আর ইউএনও স্যারের উপরে কথা বলতে পারি না।

সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুকন্ঠ ভক্ত বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে আমাকে অবগত করা হয়নি। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, কোন কারণে গাছ কাটার প্রয়োজন হলে শিক্ষা অফিস হয়ে আমার কার্যালয়ে আবেদন করবে। আমি সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিব। আমি গাছ কটার অনুমতি দিতে পারি না।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের গাছ কেটেছে শুনে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়ে যাই। গিয়ে গাছ কাটার প্রমান মিলেছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গাছ কেটে অন্যায় করেছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043380260467529