কলেজে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের যোগ্যতা প্রসঙ্গে - দৈনিকশিক্ষা

কলেজে অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের যোগ্যতা প্রসঙ্গে

আশরাফুল ইসলাম |

নতুন বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তির যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান প্রধান তথা স্নাতক (পাস) কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের যোগ্যতার বিষয়ে নতুনভাবে যোগ্যতা/শর্ত যোগ করা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গেই আমার কিছু বলা: 

স্নাতক (পাস) কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের যোগ্যতা ধরা হয়েছে স্নাতক পাস কলেজের উপাধ্যক্ষ অথবা ইন্টারমিডিয়েট কলেজের অধ্যক্ষ পদে ৩ বছর চাকুরীর অভিজ্ঞতাসহ প্রভাষক/সহকারী অধ্যাপক পদে ১৫ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা। যা পূর্বে ছিল যে কোন পদে ১৫ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা। 

নতুন নীতমালায় দেওয়া পরিবর্তিত যোগ্যতার পক্ষে যুক্তি হিসাবে বলা হচ্ছে অধ্যক্ষ হতে গেলে তাকে সিনিয়র হওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা থাকা বাঞ্চনীয়। আবার লবিং ও মেধা শক্তি দিয়ে অনেক জুনিয়র প্রভাষক অধ্যক্ষ বনে যান। ফলে সিনিয়রদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। যুক্তি আছে মানা যায়।

অপরদিকে উপাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে ৩ বছরের চাকুরীর যোগ্যতাসহ ১২ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা। যা পূর্বে ছিল যেকোন পদে ১২ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা। এখানেই প্রশ্ন যার যৌক্তিক কোন ব্যাখ্যা নাই। কেননা সহকারী অধ্যাপক কোন প্রশাসনিক পদ নয়। আবার এটা যোগ্যতা দিয়ে অর্জন করতে হয় না। যোগ্যতা দিয়ে অর্জন করা যায়ও না। কারণ, বেসরকারী কলেজে সহকারী অধ্যাপক পদটি অনুপাতের (৫ঃ২) বেড়াজালে আটকানো। ফলে বড় কলেজের প্রভাষকদের হাজারো ছাত্র/ছাত্রী ছোট কলেজে তথা নতুন কলেজের সহকারী অধ্যাপক বনে যান। আর এই সিনিয়র প্রভাষক অনেক মেধাবী ও যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়ার পরেও শুধুমাত্র অনুপাতের (৫ঃ২) কারণে প্রভাষক পদে থেকেই অবসরে যেতে হয়। আবার সহকারী অধ্যাপকদের পৃথক কোন প্রশাসনিক কাজও করতে হয় না।

একজন প্রভাষক যা করেন একজন সহকারী অধ্যাপকও তাই করেন। দু’জনের একই কাজ। একজনের যোগদান একদিন আগে অথবা জন্মতারিখ আগে থাকার সুযোগে মেধাবী বন্ধুটি আজীবন প্রভাষক থাকেন। অপরদিকে তৃতীয় শ্রেণী/বিভাগ পাওয়া বন্ধুটি তার নাকের ডগা থেকে সহকারী অধ্যাপক পদটি বাগিয়ে সিনিয়রের বুলি আওড়ান। আবার সরকারি বেতনও নেন বেশী। এটা এমনিতেই বেসরকারী কলেজ শিক্ষকদের সাথে চলমান একটা প্রহসন। এবার যোগ হলো নতুন প্রহসন। ফলে শিক্ষকদের মধ্যে সন্তুষ্টির চাইতে অসন্তোষ বড়বে, কোন অংশেই কমবে না। তাই এর সংশোধন আশু প্রয়োজন। দেশের সব প্রভাষক এর সংশোধন চান।

উদাহরণ হিসেবে বলি, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া কলেজের রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সদ্য অবসরে গেছেন স্বপন কুমার সরকার। তিনি আজীবন প্রভাষক পদেই কর্মরত ছিলেন। তার হাতে গড়া প্রায় অর্ধশত ছাত্র/ছাত্রী শুধু বড়াইগ্রাম উপজেলারই বিভিন্ন কলেজের সহকারী অধ্যাপক পদে এখনো কর্মরত আছেন। এমন উদাহরণ দেশজুরে ভুরি ভুরি। তাই বলবো অনুপাত তুলে দেয়ার পাশাপাশি যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী অধ্যাপক হওয়ার দ্বার খুলুন। একই সঙ্গে উপাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে সহকারী অধ্যাপক পদের যোগ্যতার বিষয়টি প্রত্যাহার করুন। এটা গোটা দেশের প্রভাষক সমাজের দাবী। সংখ্যাগরিষ্ঠদের পক্ষে থাকুন, দেশ ও জাতির মঙ্গল হবে। কারো মনগড়া শর্তদিয়ে প্রভাষকদের মনে নতুন করে কষ্টের পাহাড়  না গড়াই ভাল।

লেখক: প্রভাষক ও সাংবাদিক, বড়াইগ্রাম, নাটোর।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055840015411377