কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা: কোন শিক্ষক নেতা কত মেরেছেন - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত পর্ব ১কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা: কোন শিক্ষক নেতা কত মেরেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক |
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্মলগ্ন থেকে নানা ফন্দিফিকির করে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ৫ সদস্যের একটি দল প্রথমবারের মতো কল্যাণ ট্রাস্টের দুর্নীতির তদন্ত করে ২০০২ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৯০ থেকে ২০০২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া লুটপাটের কাহিনীর সঙ্গে জড়িত অনেক শিক্ষক নেতা ও কল্যাণট্রাস্টের সদস্য-সচিব। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সদস্য-সচিব ছিলেন কাজী ফারুক আহমেদ। এই সময়ে লুটপাট বেশি হয়েছে। শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমের আর্কাইভে সংরক্ষিত প্রতিবেদনগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হবে। আজ পড়ুন ১ম কিস্তি। 

 
১৫ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনের শুরুতেই ‘সার্বিক পর্যালোচনায়’ বলা হয়: “বর্তমান নিরীক্ষাদল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীগণের আবেদনগুলি পূর্বের ন্যায় অগোছালো অবস্থায় পায়। বর্তমান সদস্য-সচিব কর্তৃক তার সময়কালের রেকর্ডপত্র যথা ক্যাশ বই, বিলভাউচার, নথি ইত্যাদি যথাযথভাবে সংসক্ষণ করতে দেখা যায়। পূর্বের সদস্য-সচিবের সময়কালের লেনদেনের জন্য কোন ক্যাশ বই, প্রাপ্তি ও পরিশোধ হিসাব, স্থিতিপত্র কিছুই সংরক্ষন করেন নি। তাছাড়া প্রাপ্ত আবেদনপত্রগুলিও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করেন নি। এমনকি দায়িত্ব হস্তান্তরকালে মোট প্রাপ্ত টাকা, পরিশোধত টাকা , উদ্বৃত্ত অর্থ এবং সমর্থনে ব্যাংক সনদপত্র, মোট ইসস্যূকৃত চেক ও টাকার পরিমান, অবশিষ্ট আবেদনপত্র চেক লেখা হয়েছে কিন্তু ইস্যু হয় নি, সেগুলির সংখ্যা ও টাকার পরিমান ইত্যাদি বিস্তারিত উল্লেখপূর্বক দায়িত্ব হস্তান্তর করেন নি।
 
 প্রতিবেদনে বলা হয়,  ট্রাষ্টের তহবিল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মহাসচিব মাউশি অধিদপ্তর এবং সদস্য সচিবের যুগ্ম স্বাক্ষরে পরিচালিত হওয়ার কথা। কিন্তু শুধুমাত্র একটা ব্যাংক হিসাব ব্যতীত অন্যান্য হিসাব ও আমানত ভাইস প্রেসিডেন্টের একক স্বাক্ষরে পরিচালিত হয়েছে। মহাপরিচালক দায়িত্ব হস্তান্তরকালে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাষ্টের হিসাব ও উদ্বৃত্ত অর্থ ব্যাংক সনদসহ পরবর্তী মহাপরিচালককে হাস্তান্তর করেেেছন এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া মহাপরিচালক অফিসে রেকর্ডপত্র চাইলেও সন্তোষজনক রেকর্ডপত্র সরবরাহ করতে পারে নি।
 
 প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিরীক্ষাকালে বিভিন্ন রেকর্ডপত্র চেয়ে যেগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো যাচাইয়ে যেসব অনিয়ম নিরীক্ষাদলের পক্ষে উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে এবং প্রযোজ্য বিধির আলোকে যে বিষয়গুলো অনিয়মিত ও বিধিবহির্ভূতভাবে চিহ্নিত হয়েছে তার ভিত্তিতে আপত্তিগুলো নিন্মে অনুচ্ছেদ আকারে লিপিবদ্ধ করা হল।
 
১। হাতে নগদ টাকা:
 
নিরীক্ষাকালে ১/১০/২০০২ তারিখে সকাল ১০টায় হাতে নগদ ২১ হাজার ৮২৫ টাকা পাওয়া যায়। ৩০/৬/২০০২ তারিখে হাতে নগদ টাকার পরিমান ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪৯ টাকা। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের জারীকৃত প্রবিধানমালার ৭(৪) বিধিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে ট্রাস্টের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য অনধিক তিন হাজার টাকা রাখার বিধান আছে। এক্ষেত্রে উক্ত বিধি লংঘিত হয়েছে।
 
২। ব্যাংক উদ্বৃত্তঃ
 
নিরীক্ষাকালে ৩০/৯/২০০২ তারিখে লেনদেনের পর সোনালী ব্যাংক, তোপখানা শাখার চলতি হিসাব নম্বর ৩৩০০৯৮৮৮ তে ৬ কোটি ৬২ লাখ ১০ হাজার ৩২৯ টাকা এবং হিসাব নম্বর ৩৩০০১১০৮৪ তে উক্ত তারিখে ৬ কোটি ২৬ লাখ ৬৯ হাজার, ৯৭৯ টাকা জমার ব্যাংক প্রত্যয়ন পাওয়া যায়।
 
দ্বিতীয়তঃ সোনালী ব্যাংক তোপখানা শাখা পত্র নং সুপ্রীম/স্থায়ী আমানত /১১১ তাং ২০/০১/০২ মোতবেক অবসর প্রকল্প নামের চলতি হিসাব নং ৩৩০১১৩০৮ তে ৪০ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ৬০১ টাকা জমার প্রমাণ পাওয়া যায়।
 
কল্যান ট্রাস্টের যাবতীয় টাকা স্থায়ী হিসাবে জমা না করে কোটি কোটি টাকা চলতি হিসবে রাখা হচ্ছে। ফলে ট্রাস্ট সুদ বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ও প্রবিধান এ ট্রাস্টের যাবতীয় টাকা লাভজনক হিসাবে জমা রাখার উল্লেখ আছে। ইহা গুরুতর অনিয়ম। এজন্য সংশ্লিষ্ট ভাইস চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালকগণ দায়ী।
বিষয়টির প্রতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল।
তদন্তকারী ডিআইএ কর্মকর্তারা হলেন: ডিআইএর তৎকালীণ উপ-পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক, শিক্ষা পরিদর্শক মো. সাইফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, অডিট অফিসার চৌধুরী নাসিরুজ্জামান, মো. আব্দুল গফুর ও সঞ্জয় বরণ মিস্ত্রী।
 
 
আগামীকাল পড়ুন দ্বিতীয় পর্ব 
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0074291229248047