কাজের সময় বিচারকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা - দৈনিকশিক্ষা

কাজের সময় বিচারকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিচারিক কর্মঘণ্টার পূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে (সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উপস্থিতি কঠোরভাবে পরিহার করার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশ দেয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগে ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের মাত্রা অতীতের তুলনায় অনেক গুণ বেড়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন এবং অনুরূপ যেকোনও ডিভাইসের মাধ্যমে যেকোনও ব্যক্তির তথ্য, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি আদান-প্রদান করা যায়। তবে অতিমাত্রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে এক ধরনের আসক্তি তৈরি হয়, যা ব্যক্তি জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।’

‘‘এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সব সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশিকা-২০১৬’ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কোনও নীতিমালা বা নির্দেশিকা গ্রহণ করা হয়নি। বর্ণিত অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর জুডিসিয়াল রিফর্মসের সুপারিশক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি অনুসরনীয় নির্দেশনা দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।’’

এসব নির্দেশনায় যে ১১ দফা কাজ অবশ্যই বিচারকদের পরিহার করতে বলা হয়েছে, তা হলো —

১. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থি কোনও প্রকার তথ্য, মন্তব্য ও অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

২. কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে, এমন কোনও তথ্য,মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৩. রাজনৈতিক মতাদর্শ বা আলোচনা সংশ্লিষ্ট কোনও তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৪. কোনও সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক বা হেয়প্রতিপন্নমূলক কোনও তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৫. কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে হেয়প্রতিপন্ন করে কোনও তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৬. লিঙ্গ বৈষম্যমূলক কোনও তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৭. জনমনে অসন্তোষ ও অপ্রীতিকর মনোভব সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনও তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৮. কোনও মামলার বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।

৯. নিয়ন্ত্রণকালীন কর্তৃপক্ষ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কোনও সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনও বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।

১০. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ ও প্রচার।

১১. অপ্রাসঙ্গিক,অপ্রয়োজনীয়,মানহানীকর এবং নৈতিকতা পরিপন্থি কোনও স্ট্যাটাস, পোস্ট, লিংক, ছবি ইত্যাদি অন্যজনকে সংযুক্তকরণ, আদান-প্রদান, প্রকাশ ও প্রচার।

এছাড়া যে ৭ দফা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে —

১.সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিতব্য লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি নির্বাচন ও বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

২. প্রকাশিত তথ্য ও উপাত্তের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

৩. ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য আদান-প্রদান, প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা এবং বিচারক সুলভ মনোভব অবলম্বন করতে হবে।

৪. অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন বিষয়ে তথ্য, স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেয়া যাবে না।

৫. বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য একটি পোর্টাল, গ্রুপ থাকতে পারে,যেখানে বিচারাধীন মামলার বিষয় এবং ব্যক্তিগত বিষয় ব্যতীত কেবল আইনগত বিষয়ে আলোচনা ও তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে।

৬. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও বিচারকসুলভ আচরণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।

৭. তথ্য আদান-প্রদান ও বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজ কর্মক্ষেত্রে মামলার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বা মামলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।

এছাড়া, ‘‘বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার দেশের প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট প্রচারিত এই নির্দেশনা অমান্য করলে তা ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে এবং সেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৭’ এর পাশাপাশি প্রচলিত অন্যান্য আইন ও বিধি-বিধান প্রযোজ্য হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।’’

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043950080871582