করোনার কারণে গত কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কানাডার কিছু প্রদেশে স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর থেকে বাকি স্কুলগুলো চালু করা হতে পারে। কানাডার বিভিন্ন প্রভিন্সে ধীরে ধীরে সবকিছু আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসতে শুরু করেছে।
কিছু স্কুল হাইব্রেড মডেলে চালু হচ্ছে। কিছু দিন ক্লাস রুমে বসে ক্লাস আবার কিছু দিন বাসায় বসে অনলাইনে ক্লাস। এ মডেলটিকে বলা হচ্ছে হাইব্রিড মডেল।
তবে কানাডায় মানুষের মধ্যে এখনো করোনা আতঙ্ক রয়ে গেছে। পুনরায় স্কুল খুলে দেয়ার পরিকল্পনায় অনেক অভিভাবক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন,পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক হয়ে না আসলে সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না।
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সামাজিক দূরত্ব এবং শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মচারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ইতোমধ্যেই নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে স্কুল বোর্ডগুলো। এর মধ্যে শ্রেণিকক্ষে অবাধে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে তারা।
সংক্রমণ থেকে বাঁচতে শ্রেণিকক্ষের আকারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবাধে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থার উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও মহামারি বিশেষজ্ঞ কলিন ফারনেস বলেন, অনেক স্কুলে শ্রেণিকক্ষের আকার ছোট করার কথা বললেও তাদের অনেক ক্লাসরুমে জানালা না থাকার কারণে অবাধ বায়ুচলাচলের জন্য বড় বাঁধা। ক্লাশরুমে অবাধ বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা না থাকলে শিক্ষার্থীদের ঘর থেকে টেনে এনে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া হবে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, বিভিন্ন প্রদেশ স্কুল খোলার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাতে আমরা সমর্থন দিচ্ছি।
স্কুল খোলার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে প্রবাসী বাঙালি অভিভাবকরাও শঙ্কিত। কেউ কেউ জানিয়েছেন, তারা সন্তানদের স্কুলে দেওয়ার পরিবর্তে ঘরে বসে অনলাইনে ক্লাস করাবেন।
আলবার্টার ক্যালগেরিতে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালি ও উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মাহমুদ হাসান দিপু বরেন, করোনাকালের গত সাত মাসের গৃহবন্দী জীবনে শিশু, কিশোরদের একাডেমিক শিক্ষার চেয়েও মানসিক সমৃদ্ধি ও বিকাশে যে অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে এর ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে আমি শঙ্কিত।
আলবার্টা প্রদেশের ক্যালগেরির বাসিন্দা আশরাফুর রহমান বলেন, বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া নিয়ে আমরা শঙ্কিত। আমি মনে করি, এ ব্যাপারে সরকারকে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সামনের দিনগুলো কেমন হবে তা চিন্তা করে আমি আমার সন্তানদেরকে অনলাইনে পড়াশোনা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
উল্লেখ্য, পুরো কানাডাতেই করোনার আতঙ্ক এখনো কাটেনি। সকল শ্রেণির মানুষ চেষ্টা করছে যার যার দিক থেকে সতর্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। অন্যদিকে আলবার্টায় ইতোমধ্যে মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস-আদালত ও ব্যবসা বাণিজ্য চলছে।