শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমরা অনুধাবন করি কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নের জন্য শুধুমাত্র ভবন তৈরি করে দেয়াটা যথেষ্ট নয়। বরং প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রশিক্ষক ও শিক্ষক নিয়োগ এবং তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে শ্রম বাজারের চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে উপযুক্ত কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। একই সাথে সামাজিকভাবে কারিগরি শিক্ষার মূল্য ও চাকরির ক্ষেত্রে এর উপযোগিতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
রোববার (১৬ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রকল্পের ‘স্কিলস কম্পিটিশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
ডা. দীপু মনি বলেন, দেশের কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উন্নয়নের জন্য প্রতি উপজেলায় তরুণদের জন্য একটি করে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আগামী পাঁচ বছরে ১ কোটি ২৮ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান করা, যার মধ্যে প্রতি উপজেলা থেকে ১,০০০ তরুণ-তরুণীর জন্য বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগও থাকবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণ দান করার কাজে সরকারি কেন্দ্র ব্যবহার করতে পারবে, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতিমালা ২০১১ সেই সুযোগ করে দিয়েছে। তাতে করে সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নির্বাচিত হওয়ার আগে আমরা যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তার মধ্যে একটি হল দেশের শিক্ষা খাতের সর্বস্তরে উন্নয়ন সাধন। এই উদ্দেশ্যে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার ক্ষেত্রে কারিকুলাম এবং পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আমরা এটাও জানি, শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষাদান পদ্ধতির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, যার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
ডা. দীপু মনি আরও বলেন, আমাদের প্রয়োজন উদ্ভাবনী চিন্তা, উদ্যোক্তা, এবং আরেকটু সাহসী হওয়ার। ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার কুফল আমরা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি, যা নতুন এবং নিজস্বভাবে চিন্তা করতে আমাদের নিরুৎসাহিত করে। সেই জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি সবচেয়ে আগে৷ তার সঙ্গে চেষ্টা করছি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার। আমাদের স্বপ্ন ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশ এবং
২০৪১ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ উন্নত দেশে পরিণত হওয়া৷ যথোপযুক্তভাবে শিক্ষিত এবং সঠিক দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ এই স্বপ্ন পূরণ করার আবশ্যিক পূর্বশর্ত।
ডা. দীপু মনি বলেন, ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের জন্য সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। শুধুমাত্র বাজারের চলতি সস্তা পণ্য নয়, পরিবর্তনশীল কুচির জন্য কাস্টমাইজড পণ্য উৎপাদন ও সেবা প্রদান করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। আর তখনি আমরা বিবি বাজারে শক্ত অবস্থানের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হতে পারব৷ এই পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে চলার উপযোগী করে আমাদের শিক্ষা-দীক্ষা, উদ্ভাবন ও দক্ষতা উন্নয়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশিন সচিবালয়ের সচিব মো. আলমগীরসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।