উচ্চ মাধ্যমিকের সমমানের শ্রেণি ‘ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে’ ভর্তির ক্ষেত্রে ৫৪ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করে কারিগরি শিক্ষাক্ষেত্রে ভর্তি নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ। এই নীতিমালা মেনেই এখন সরকারি পলিটেকনিক কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে। ‘অবহেলিত এই শিক্ষাকে’ টেনে তোলার জন্যই এভাবে বাড়তি এই কোটা রাখা হয়েছে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
জারি করা নীতিমালায় বলা হয়, ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধা ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী কোটায় ৫ শতাংশ, এসএসসি (ভোকেশনাল) কোটায় ১৫ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধঃস্তন দফতরসমূহ ২ শতাংশ, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহে মেয়েদের ২০ শতাংশ, অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য সংরক্ষিত মহিলা কোটায় ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ঢাকা, চট্টগ্রাম, কাপ্তাই পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে প্রতিটিতে চারটি করে আসন ও অন্যান্য ইন্সটিটিউটে দুইটি নির্ধারণ থাকবে। এসএসসিসহ দুই বছর মেয়াদি ট্রেড কোর্সের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। অন্যান্য ক্যাটাগরিতে কোটার তারতম্য রয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, এইচএসসি (ভোকেশনাল), বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ডিপ্লোমা ইন কমার্স কোর্সে ৯ থেকে ৩০ মে ভর্তি কার্যক্রম চলবে। ১ জুলাই শুরু হবে ক্লাস। এছাড়া ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংসহ সকল ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি কার্যক্রম ১৫ মে থেকে শুরু হয়ে চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত। ক্লাস শুরু ১১ আগস্ট।
তবে গত সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে যে নীতিমালা জারি করা হয় তাতে নির্ধারিত আসনে কোটা বাতিল করা হয়। নির্ধারিত আসনের বাইরে কোটা রাখা যাবে।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালায় বলা হয়, মেধার ভিত্তিতে ভর্তির পরে যদি বিশেষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কোনও আবেদনকারী থাকে, তাহলে মোট আসনের অতিরিক্ত ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য, ৩ শতাংশ বিভাগীয় ও জেলা সদরের বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য, ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্ত দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সন্তানদের জন্য, দশমিক ৫০ শতাংশ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) জন্য এবং দশমিক ৫০ শতাংশ প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। সবমিলে কোটা ১১ শতাংশ। তবে উপযুক্ত কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেল এ আসন কার্যকর থাকবে না।
কোটা বাতিল সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে প্রাধান্য দিয়ে সাধারণ শিক্ষায় উচ্চ মাধ্যমিকে নির্ধারিত আসনে কোটা বাতিল করা হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্য মতে, বর্তমানে কারিগরিতে ভর্তির হার ১৫ শতাংশ। এ হার ২০২০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে দুই শিফটে বর্তমানে মোট আসন ৪৮ হাজার।
কোটা বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের উপ-সচিব সুবোধ চন্দ্র ঢালী বলেন, কারিগরি শিক্ষা অবহেলিত। এ কারণে এ শিক্ষাকে টেনে তুলতে কোটা পদ্ধতি রাখতে হবে। বিশেষ করে মেয়েরা এ শিক্ষায় আসতে চাইছে না। এ কারণে মেয়েদের কোটা বেশি রাখা হয়েছে।