কার্টুনিস্ট ও সাংবাদিক আহমেদ কবির কিশোর, লেখক মোস্তাক, দিদারুলসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারকৃত ১১ জনকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। শুক্রবার (৮ মে) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, দপ্তর সম্পাদক সালমান সিদ্দিকী, প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, নগর কমিটির সদস্য সায়মা, সাথী, সাদেকুল ইসলাম সাদিক প্রমুখ।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা বলেন,‘রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠক দিদারুল ইসলাম ভুঁইয়া ও স্যোসাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট ও লেখক মোস্তাক আহমেদকে র্যাব পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। এ ঘটনায় সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। মোস্তাক ও দিদার দুজনেই ফেসবুকে সমালোচনামূলক ও রাজনৈতিক লেখালেখি করতেন। দিদার লেখালেখির পাশাপাশি করোনাকালীন পরিস্থিতিতে ত্রাণ সহায়তামূলক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন। অন্যদিকে কার্টুনিস্ট কিশোরকে কার্টুন আঁকার দায়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি শেখ রেহানা মালিকানাধীন ও বেবি মওদুদ সম্পাদিত সাপ্তাহিক বিচিত্রায় নিয়মিত কার্টুন আঁকতেন। সারাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দোহাই দিয়ে এভাবে ১১ জনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি এ করোনাকালীন পরিস্থিতিতেও রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, গুমের ঘটনা ঘটছে। করোনা মোকাবেলায় সরকারের সমালোচনা করার জন্য সরকারি কলেজের তিনজন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। চিকিৎসক, নার্সদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের ৫৩ দিন পর খোঁজ মিললেও তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর পর পরই মুশতাক ও দিদারকে র্যাব পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে সরকার করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া শুরু থেকে ‘নো টেস্ট, নো করোনা’ নীতি নিয়েছে। প্রথমেই লকডাউন না করে ভাইরাস ছড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত মেডিকেল ইকুইপমেন্টের ব্যবস্থা করেনি। গরীব, নিম্নবিত্ত, ক্ষেতমজুর, শ্রমিক, হকার, ডে-লেবার, ঝি, ফুটপাথের দোকানদার ইত্যাদি শ্রেণি পেশার মানুষের জন্য নামমাত্র বরাদ্দ দিয়েছে। আবার যতটুকু বরাদ্দ দিয়েছে তাও সরকার দলীয় লোকেরা আত্মসাৎ করার খবর পাওয়া গেছে। এসব বিষয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা তো নেয়নি বরং এই অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে যারা সমালোচনা করেছে তাদের র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ফ্যাসিবাদী সরকার এরকম বিরুদ্ধ মতগুলো দমন করার জন্যই ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ নিয়ে এসেছে। আমরা আগেই বলেছিলাম -এই আইন সরকার তার বিরুদ্ধ মতগুলো দমন করার কাজে লাগাবে।’
মাসুদ রানা বলেন, ‘জনগণের নিরাপত্তা, মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ অবিলম্বে দিদার, মোস্তাক, কার্টুনিস্ট কিশোর ও সাংবাদিক কাজলসহ ১১ জনের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ বাতিল করতে হবে।’