শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলছেন, সরকার নোট গাইড ব্যবস্থা বন্ধ করতে চায়। বর্তমান সৃজনশীল শিক্ষাব্যবস্থায় নোট গাইডের প্রয়োজন নেই।
মন্ত্রী আরও বলেছেন, অনেক প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষক নোট গাইড প্রকাশকের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেন, ছাত্র-ছাত্রীদের নোট গাইড কিনতে বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ করেন মন্ত্রী। এসব বন্ধে জেলা প্রশাসকদের আরও তৎপর হতে হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: গাইড বই থেকে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন করার পক্ষে ডা. তুষার!
নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের হাতে অনিয়মিতদের প্রশ্ন, কেন্দ্র সচিবকে শোকজ
একটা বাংলা প্রশ্ন করতে পারে না, শিক্ষা বোর্ড চালায় কীভাবে : ড. জাফর ইকবাল
ভুল আর নোট গাইডের হুবহু প্রশ্ন
গাইড থেকে হুবহু প্রশ্নে এসএসসির বাংলা পরীক্ষা, আছে ভুলও
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে শিক্ষা ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন স্কিল রেডিনেস ফর অ্যাচিভিং এসডিজিএস অ্যান্ড অ্যাডপ্টিং ইন্ড্রাস্টিয়াল রেভ্যুলেশন ৪’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এসব কথা বলেন তিনি।
ভুলে ভরা ও পুরানো প্রশ্নপত্রে এসএসসির বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষা নেয়ায় দায়ীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি আরও বলেন, ১৫টি কক্ষে পুরনো বছরের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়েছে। এ অব্যবস্থাপনার বিষয়ে শিক্ষকদের কাছে জানতে চাওয়া হবে।
তিনি বলেন, কোনো কোনো গাইড ও নোট বই মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান অনৈতিকভাবে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আর্থিকভাবে প্রলুব্ধ করে। তারা এসব নোট ও গাইড শিক্ষার্থীদের কিনতে বাধ্য করে।
চলিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র বিতরণে ভুলের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সংখ্যার হিসাবে এটা নগণ্য। কিন্তু তাও-বা কেন হবে?
শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসব উত্তরপত্র আলাদাভাবে রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ উঠেছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষার একটি প্রশ্ন হুবহু নোট বই থেকে করা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা কে করেছেন, তা শনাক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা দেখছেন।
তবে, দৈনিক শিক্ষার অপর এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেছেন, ‘৪/৫শ শিক্ষকের মধ্যে চিহ্নিত করতে সময় লাগবে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সাত হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। যেহেতু সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে এই নিয়োগ হয়, সে জন্য এটা করতে এক বছর বা এর চেয়ে বেশি সময় লাগতে পারে।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষার প্রথম দিন ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বহু জেলা ও উপজেলায়। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে অসংখ্য পরীক্ষার্থী। কোথাও কোথাও ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পর আবার ডেকে এনে আসল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। প্রতিবাদ হয়েছে কোথাও কোথাও। বরিশাল, যশোরের চৌগাছা, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, নীলফামারী, ময়মনসিংহের গফরগাঁওসহ অনেক এলাকায় ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে সিলেবাসে অর্থাৎ অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নে উত্তর লিখতে হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলেছে, বহু নির্বাচনী পরীক্ষা ৩০ মিনিটের ও ৩০ মার্কের। এই পরীক্ষা প্রথমেই দিতে হয়। তাদের সুযোগ ছিল না হলে বসে সিলেবাস যে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের, তা দেখার। এই ভুল যারা প্রশ্ন বণ্টন করেছে তাদের। এজন্য তারা পরীক্ষায় সঠিক উত্তর দিতে পারেনি বলে চিন্তিত।