মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শোভাযাত্রা করে প্রভাতফেরিতে অংশ নেন। ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত করা হয় ।
সকাল সাতটায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ লেখক ও শিক্ষাবিদ মো. রহমত উল্লাহ্’র নেতৃত্বে প্রভাতফেরিটি “আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি?” গানটি গাইতে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এসে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শহিদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়াও নিকটবর্তী প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রভাতফেরি করে এসে পুষ্পার্পণ করে কিশলয়ের শহিদ মিনারে। এতে আরও অংশগ্রহণ করেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. মজিবুল হক, শাহানা পারভীন প্রমুখ।
পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর ভাষা শহিদ সালাম, বরকত, রফিক, শফিউর, জব্বারসহ অন্যান্য সকল শহিদদের অম্লান স্মৃতি স্মরণে ও তাদের আত্মত্যাগের মহিমা ব্যক্ত করে উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের মাঝে বক্তব্য দেন কলেজ শাখার শিক্ষক প্রতিনিধি বিমান কুমার চক্রবর্তী এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ।
বাঙালির ভাষা সংগ্রামের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরে বক্তব্য দেন বিমান চক্রবর্তী। বক্তব্য পর্বের এক পর্যায়ে মো. রহমত উল্লাহ্ বলেন, বিশ্ব স্বীকৃত আমাদের এই শহিদ দিবস মূলত ছিল প্রতিবাদ দিবস। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্যই সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিলেন হাজারো বীর বাঙালি। স্বাধীনভাবে মাতৃভাষায় কথা বলার, লেখাপড়া করার, সাহিত্য রচনা করার, কাজকর্ম করার অধিকার আদায় করাই ছিল সেই প্রতিবাদের উদ্দেশ্য।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই ২১শে ফেব্রুয়ারি কেবল শোক পালনের দিন নয়, প্রতিবাদী হবার দিন। অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার, শোষণ, বঞ্চনা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবার দিন। যে প্রতিবাদী সে নিজে অন্যায় করে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে। এমন মানুষ এখন আমাদের দেশ ও জাতির জন্য খুব বেশি প্রয়োজন। এমন মানুষ হয়ে উঠার শিক্ষাই সুশিক্ষা। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যোগ্য নাগরিক হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত হতে হবে শিক্ষার্থীদের। আজকের মেয়েদের হয়ে উঠতে হবে শ্রেষ্ঠ মাতা, যাতে আমরা হয়ে উঠতে পারি শ্রেষ্ঠ জাতি। যাতে সমগ্র বিশ্বে জ্ঞানে-গুণে বীর বাঙালি হতে পারে মাথা উঁচু করা অগ্রবর্তী সৈনিক।