কী আছে পাটগ্রাম ছিটমহলে ২০ শিক্ষকের কপালে - দৈনিকশিক্ষা

কী আছে পাটগ্রাম ছিটমহলে ২০ শিক্ষকের কপালে

লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি |

প্রশাসনিক নানা জটিলতা আর দলীয় গ্রপিংয়ের কারণে ছিটমহলের চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০ জন শিক্ষকের জীবনে অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে। প্রশাসন চাইছে তাদের বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিতে। কিন্তু তাতে যে বিদ্যালয়গুলো প্রতিষ্ঠা করতে তারা আপ্রাণ চেষ্টা করে এসেছেন এবং যেগুলোতে অমানুষিক শ্রম দিয়ে কচি কাঁচাদের লেখাপড়া শেখাচ্ছেন, সেগুলো থেকে তাদের বাদ পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ছিটমহল থেকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হওয়া পর এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিদ্যালয় গুলোতে ১৫০০ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় প্রকৌশলী বিভাগের একটি করে ভবন নির্মাণ করে দেন। ১৫০০ প্রকল্পের ভবন নির্মানের পর থেকে শুরু হয় শিক্ষক নিয়োগের নানান জঠিলতা। জঠিলতা আর দলীয় গ্রুপিংয়ের রোষানলে পড়েন ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা। কি হবে এই ২০শিক্ষকের তা কেউ জানে না।

তৎকালীন পাটগ্রাম উপজেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম মোস্তফা লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে এ জটিলতার সমাধান চেয়ে একটি পত্র প্রেরণ করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল জেলা প্রাথমিক  শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার এই মর্মে মতামত চেয়ে পাটগ্রাম উপজেলা শিক্ষা কমিটির নিকট একটি বিশেষ পত্র প্রেরণ করেন। কিন্তু পত্র পাওয়ার এত দিনেও কোন সিদ্ধান্ত জানাননি উপজেলা শিক্ষা কমিটি। 

সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের হাজারো বার ধর্না দিলেও মিলছে না আশার বাণী। একদিকে শেষ হয়ে গেছে তাদের সরকারি চাকরি বয়সসীমা, অন্যদিকে পরিবারের সদস্যরা তাকিয়ে আছেন তাদের দিকে। প্রশাসন চাইছে, বিদ্যালয়গুলোতে যারা এখন শিক্ষকতা করছেন, তাদের বাদ দিয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক দিতে। তা করা হলে চাকির হারিয়ে অকূল সাগরে পড়বেন স্কুলের প্রতিষ্ঠা লগ্ন হতে খেটে আসা এসব শিক্ষক। 

৪৭-এ দেশবিভাগের পরে দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে বন্দিজীবন কাটানোর পর অবশেষে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার মধ্য দিয়ে অনিশ্চিত জীবনের অবসান ঘটেছে ছিটমহলবাসীদের। এখন তারা নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম অল্প সময়ে ব্যাপক পরিবর্তন এনে দেয়। অবহেলিত এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে বিলুপ্ত ছিটমহলে শিক্ষিত বেকার তরুনদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা হয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

তারই ধারাবাহিকতায় পাটগ্রাম উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহলে বাঁশকাটা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (বিলুপ্ত ১১৯নং বাঁশকাটা), মৌলভী খিদিরপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৪নং লতামারী ছিটমহল), ছলেমান কবিরন নগর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (২১নং পানি শালা ছিটমহল), আজিজুল নগর ভোটবাড়ী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৮নং ভোটবাড়ী ছিটমহল) নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিদ্যালয় গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীরা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ব্যাপক সফলতা অর্জন করে। কিন্তু ২০১৫ সালে এসব স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীরা যোগদান করলেও বর্তমানে হতাশ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ১১৯নং বাঁশকাটা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রী দিব্য নাথ রায় অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলেন, আমরা দীর্ঘ ২০১৫ সাল থেকে বিদ্যালয়গুলো চালিয়ে যাচ্ছি, এখন পর্যন্ত কোন আলোর মুখ দেখছি না, কী আছে আমাদের কপালে? আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আমাদের বিলুপ্ত ছিটমহলে স্কুলগুলো যেন সরকারিয়করণ করে আমাদের রুটি রোজগারের পথ সুগম করে দেন। আমাদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা করেছেন, তা ছিটমহলের জনগণ কোন দিনও ভোলার মত না। আমাদের প্রাণের দাবি আমাদের ছিটমহলে স্থাপিত ৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয় করণ করা।

পাটগ্রাম উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবুল হোসেনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সরকারিকরণ করার জন্য সকল দপ্তরে পত্র প্রেরণ করেছি। সরকারের সিদ্ধান্তক্রমে আমরা ব্যবস্থা নেব।

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0097301006317139