বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পেরিয়েছে। পাস করে গেছেন হাজারো শিক্ষার্থী। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো আয়োজন হয়নি প্রথম সমাবর্তনের। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই সমাবর্তনের আয়োজন হচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, এ ব্যাপারে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ শুরু করেছে তারা।
২০০৬-০৭ সেশনে যাত্রা শুরু হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে সব বিভাগ মিলিয়ে অন্তত সাতটি ব্যাচ পাস করে বেরিয়ে গেছে। প্রয়োজনের খাতিরে অনেকেই আবেদন করে সার্টিফিকেট নিয়ে গেছেন। অথচ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর সমাবর্তনের মাধ্যমে পাস করা শিক্ষার্থীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেওয়ার কথা।
এ বিষয়ে গণিত প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুল কাদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৩টি ব্যাচ হয়ে গেছে। অথচ এখনো কোনো সমাবর্তনের আয়োজন হয়নি। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। বেশ কিছুদিন আগে উপাচার্য স্যার এ বছরের ভেতর দেশের সেরা সমাবর্তনের ঘোষণা দিলেও এখনো তার কোনো লক্ষণ নেই। আমাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব সমাবর্তনের আয়োজন করা হোক।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, সমাবর্তন আয়োজনের লক্ষ্যে ৫২তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি আয়োজক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। যদিও কমিটি গঠন হওয়ার পর কোনো প্রস্তুতি সভা, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া, ভেন্যু নির্বাচনসহ কোনো কার্যক্রমই দৃশ্যমান হয়নি। তবে সমাবর্তন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. এ কে এম রায়হান উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে সমাবর্তনের অনুমতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য আচার্য (রাষ্ট্রপতি) বরাবর সাক্ষাতের সময় চেয়ে আবেদন করেছি।
সমাবর্তন নিয়ে আমরা যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গেই কাজ করছি। আশা করছি, এ মাসের ভেতর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করতে পারব।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ সমাবর্তনের আওতাভুক্ত। অন্যান্য সব অবস্থা ঠিক থাকলে এবং সবার সহযোগিতা পেলে আগামী বছরের জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতেই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।’
এদিকে গত জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে সমাবর্তনের খরচ উল্লেখ করে বরাদ্দ রাখলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে তা রাখা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আবু তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ‘সমাবর্তনের বাজেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওভাবে রাখা হয় না। রেজিস্ট্রেশন ফি, স্পন্সর, ইউজিসির অনুদান এবং অন্যান্য মাধ্যম থেকে এর ব্যবস্থা করা হয়। এরই মধ্যে সমাবর্তন নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে এবং খুব দ্রুতই মাহামান্য আচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব।’