প্রশাসনের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কম্পিউটার ল্যাব। এতে ল্যাবের অধিকাংশ কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেছে। অন্যদিকে, ল্যাবটি বন্ধ থাকায় এ অনুষদের শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার কোর্স শেষ করলেও পাচ্ছেন না কোনো ব্যবহারিক জ্ঞান।
২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ২৬টি কম্পিউটার নিয়ে যাত্রা শুরু করে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কম্পিউটার ল্যাবটি। প্রথমদিকে ল্যাব তদারক কমিটির আওতায় এটি পরিচালিত হতো। পরে অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের জন্য ল্যাবটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের নিচতলায় ডিন অফিসের পাশেই একটি কক্ষে তালাবদ্ধ রয়েছে কম্পিউটারগুলো। গত ১০ বছরে সার্ভিসিং না করানোর কারণে সব কম্পিউটারই অকেজো হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, কয়েকদিন আগে তালাবদ্ধ ল্যাবটি পরিষ্কার করার জন্য খোলা হয়। তখন তিন-চারটি ছাড়া সব কম্পিউটার নষ্ট পাওয়া যায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, অনুষদের ডিনের উদ্যোগের অভাব আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলার কারণে দুই বছরের বেশি সময় ধরে ল্যাবটি বন্ধ রয়েছে। এতদিন বন্ধ থাকার পরও তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি। অথচ সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত অর্থনীতি, লোকপ্রশাসন, নৃবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক কম্পিউটার কোর্স পড়ানো হয়। কিন্তু ল্যাব বন্ধ থাকার ফলে তারা ব্যবহারিক ক্লাস ছাড়াই কোর্সটি শেষ করেন।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা কোর্স হিসেবেই শেষ করেছেন। কিন্তু কোনো কিছু শিখতে পারেননি। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বলেন, 'কম্পিউটার ল্যাব না থাকায় আমরা কম্পিউটার কোর্সের ব্যবহারিক ক্লাস করতে পারিনি। শুধু ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছি। ক্লাস ছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আরও খারাপ করেছি।'
অন্যদিকে, শিক্ষকরাও বলছেন বাধ্যতামূলক থাকায় এ কোর্সটি পড়ানো হয়। কিন্তু ল্যাব সচল না থাকায় শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক কিছু শিখতে পারছেন না। ফলে কম্পিউটারের মূল জ্ঞান অর্জন ছাড়াই কোর্স শেষ করছেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, অনেক সমস্যার কারণে ল্যাবটি চালু করা যায়নি। আমি নতুন দায়িত্ব নিয়ে ল্যাবটি চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। সংস্কারের জন্য চার লাখ টাকা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করা হয়েছে।
ল্যাব তদারক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট স্বল্পতার কারণে ল্যাবটির উন্নয়ন সঠিকভাবে করা হয়নি। সব ল্যাব অনুষদ ও বিভাগের নিয়ন্ত্রণে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শিগগির ল্যাবটি চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।