কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ভর্তির সময় ধূমপান ও রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার অঙ্গীকার করলেও তা মানছে না কেউই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ভর্তির সময় পূরণকৃত ভর্তি ফরম ও রেজিস্ট্রেশন ফরমেই রয়েছে এ অঙ্গীকারনামা।
অঙ্গীকারনামায় রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি নিলেও ক্যাম্পাসটিতে রাজনীতি ও ধূমপান চলছে লাগামহীনভাবে। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি যেমন সরব তেমন শিক্ষক রাজনীতিও। যে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি সরব এবং প্রকাশ্যেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা করে ধূমপান সেখানে ভর্তির সময় এমন অঙ্গীকার করা নিতান্তই হাস্যকর। প্রতিষ্ঠার এক বছর পর ২০০৭ সালের ২৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়টিরএকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়।
এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১৩টি ব্যাচ এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রথম ব্যাচ থেকেই ভর্তি ফরম ও রেজিস্ট্রেশন ফরমে অঙ্গীকারনামায় রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার অঙ্গীকার নেওয়া হয়।
যে অঙ্গীকার বর্তমান ফরমগুলোতেও বলবৎ আছে। ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতারাই নিয়ন্ত্রণ করে আবাসিক হলগুলো। এমনকি ছাত্র রাজনীতির নিয়মিত কর্মকান্ডে যোগদান না করলে মেলে না হলগুলোতে সিট। বাধ্যও করা হয় হল ছাড়তে।
ছাত্রলীগের সহিংস রাজনীতি ও দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে ২০১৬ সালে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দলীয় কর্মীদের দ্বারাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে ভর্তি হই একটি রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে।
কিন্তু ভর্তির পরেই তা ভঙ্গ করতে হয় আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় জিম্মি হয়ে আছে বলেও হতাশা প্রকাশ করেন বিভিন্ন বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলেও সম্ভব নয়।