সরকারি নির্দেশ থাকলেও কুষ্টিয়া মিশন স্কুলে মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়নি। আজ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) কোনো অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের রচনা বা চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার কোনো আয়োজন ছিল না প্রতিষ্ঠানটিতে। কারণ, শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে প্রমোদ ভ্রমণে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়ার মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। ১৬ মার্চ থেকে টানা পনের দিনের ছুটি। আগামী ২৮ মার্চ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে বলে মূল ফটকে ঝোলানো এক নোটিশে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
গত ১৭ মার্চ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপন করেনি প্রতিষ্ঠানটি। সরকারি সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শিক্ষকদের প্রমোদ ভ্রমন কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সে প্রশ্ন সবার।
শিক্ষকদের প্রমোদ ভ্রমণের বিষয়ে বিদ্যালয়ের মূল ফটকে ঝোলানো নোটিশে বলা হয়, আগামী ১৬ মার্চ শনিবার থেকে ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দের শিক্ষা সফর উপলক্ষে বিদ্যালয় ছুটি থাকবে। আগামী ৩০ মার্চ শনিবার থেকে বিদ্যালয়ে যথারীতি ক্লাস চলবে।
স্থানীয়রা জানান, স্কুল ছুটি দিয়ে পরিবার নিয়ে ভারত ঘুরতে গেছেন শিক্ষক সদস্যরা। প্রধান শিক্ষক মনিতা মানকিন তার ক্ষমতা বলে সংরক্ষিত ছুটি দিয়ে এ ভ্রমণে গিয়েছেন। সামনেই প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে সফরে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিক্ষকদের কাছ থেকে এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন আচরণ প্রত্যাশিত নয়।
তবে, শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে প্রমোদ ভ্রমণে যাওয়ার বিষয়ে অবহিত নন জানিয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে জানান, জেলার বাইরে সফরে গেলে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হয়। মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সফরে যাওয়ার বিষয়ে আমাকে জানাননি। মিটিংয়ের দোহাই দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদুর রহমান।
এদিকে, গত ১৪ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে দেশের সব জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও আঞ্চলিক উপপরিচালকদের কাছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গত ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত এক সভার কার্যবিবরণী পাঠানো হয়। সভার কার্যবিবরণীতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচির কথা উল্লেখ ছিল। গত ১৪ মার্চ জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের পাঠানো চিঠিতে এ কার্যবিবরণী অনুসারে কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কুষ্টিয়ার মিশন স্কুলে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি বাস্তবায়নে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছি কিনা জিজ্ঞেস করলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদুর রহমান দৈনিক শিক্ষার প্রতিবেদককে বলেন, ‘কিসের বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ?! এটা ননএমপিও প্রতিষ্ঠান। মিটিংয়ে আছি পরে কথা বলব।’