কৃষি শিক্ষার বইয়ের মলাট আনন্দপাঠের - দৈনিকশিক্ষা

কৃষি শিক্ষার বইয়ের মলাট আনন্দপাঠের

নিজস্ব প্রতিবেদক |

প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের বিনামূল্যের বইয়ে নানা ধরনের ত্রুটি ধরা পড়ছে। ঠিকমতো বাঁধাই না করায় বইয়ে সাদা পৃষ্ঠা ও একই পৃষ্ঠা বার বার এসেছে। এমনকি পৃষ্ঠাও বাদ পড়েছে। নিম্নমানের কালি ব্যবহারের কারণে ছাপা অস্পষ্ট হয়েছে। অসতর্কতার সঙ্গে কাজ করার কারণে এক বইয়ের মলাটে ব্যবহার করা হয়েছে অন্য বইয়ের মলাট। নানা ত্রুটি থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেকেই ফেরত দিচ্ছে বই উত্সবে পাওয়া বই। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরাও। আবার বইয়ের সংকট তৈরি হওয়ায় কয়েকটি বিষয়ের বই পুনঃমুদ্রণ করা হচ্ছে। বিনামূল্যের বই বিতরণের পর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এভাবে বইয়ের ত্রুটির খবর আসছে।

টাঙ্গাইলে ঘাটাইল উপজেলার ঝুনকাইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে বিতরণ করা সপ্তম শ্রেণির আনন্দপাঠ বইয়ে দেখা যায়, বইটির উপরে লেখা আনন্দপাঠ (বাংলা দ্রুতপঠন)। কিন্তু বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠা খুলতেই বের হয় সপ্তম শ্রেণির কৃষি শিক্ষার সূচিপত্র। এর এক নম্বর পৃষ্ঠায় প্রথম অধ্যায় কৃষি ও আমাদের সংস্কৃতি, ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় আনন্দপাঠের গল্প বুলু, লেখক অজিত কুমার গুহ। আবার ১৬ নম্বর পৃষ্ঠায় কৃষির দ্বিতীয় অধ্যায় কৃষি ও প্রযুক্তি লেখা রয়েছে। একই ত্রুটি দেখা গেছে কুমিল্লা সদরেও।

বিভিন্ন বই ঘেঁটে দেখা গেছে, সপ্তম শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থীর বিজ্ঞান বইয়ের ৮২-৮৩, ৮৬-৮৭, ৯০-৯১ ও ৯৪-৯৫ নম্বর পৃষ্ঠা সম্পূর্ণ ফাঁকা (সাদা)। এ ছাড়া অসংখ্য পৃষ্ঠার ছাপা অত্যন্ত নিম্নমানের (অস্পষ্ট); ষষ্ঠ শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থীর ইংরেজি বইয়ের ১০১ পৃষ্ঠা থেকে ১০৮ পর্যন্ত পৃষ্ঠা নেই। গণিত বইয়ের পৃষ্ঠা এলোমেলো, পৃষ্ঠা আছে অথচ কোনো লেখা নেই— এ রকম নানা মুদ্রণ ত্রুটি। পঞ্চম শ্রেণির ধর্ম বইয়ের ১৩২ থেকে ১৩৬ পর্যন্ত পৃষ্ঠা নেই। অনেকের গণিত বইয়ের উত্তরমালা নেই। বাংলা বইয়ে একই পৃষ্ঠা বার বার দেওয়া হয়েছে। বাদ পড়েছে অনেক পৃষ্ঠাও।

পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, তার বাংলা বইয়ে ৩৯ পৃষ্ঠা থেকে শুরু হয়ে ৫৪ পৃষ্ঠা পর্যন্ত গিয়ে আবার ৩৯ পৃষ্ঠা থেকে শুরু হয়েছে। এরপর ৫৫ থেকে শুরু হয়ে ৭০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত গিয়ে আবার ৫৫ থেকে শুরু হয়েছে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, বইয়ে মুদ্রণ ত্রুটি থাকায় তারা সোম, মঙ্গল ও বুধবার স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের কাছে বই ফেরত দিয়েছে। শিক্ষকরাও জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের অনেকেই স্কুলে এসে বই পরিবর্তনের জন্য জমা দিয়েছে। তাদের অনেকের বই পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে, অনেকের বই পরবর্তীতে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. শারমিন ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, দুই একজনের বইয়ে মুদ্রণ ত্রুটি থাকতেই পারে। তার মানে এই নয় যে, সব বইয়ে মুদ্রণ ত্রুটি রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবুল খায়ের জানান, গত তিনদিন নগরীর অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখেছি। কেউ এমন অভিযোগ করেনি। কোনো শিক্ষার্থীর বইয়ে এমন সমস্যা দেখা দিলে প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে বই পরিবর্তন করে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এনসিটিবি জানিয়েছে, সারা দেশে ৯৮ থেকে ৯৯ ভাগ বই পৌঁছে গেছে। যেখানে বই যায়নি তারা চাহিদা কম দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে নতুন করে চাহিদা নেওয়া হচ্ছে। সে চাহিদার আলোকে বই পুনঃমুদ্রণ হচ্ছে। কুড়িগ্রামে ভোকেশনাল বইয়ের সংকট দেখা গেছে। এ বিষয়ে এনসিটিবি জানিয়েছে, তারা বইয়ের চাহিদা কম দিয়েছিল।

এ ছাড়া বইয়ের মান তদারকির জন্য মন্ত্রণালয় ৮টি পৃথক কমিটি গঠন করেছে। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানের বই বিতরণের কাজ তদারকি করছে। বইয়ের কোনো সমস্যা পেলে তাও সংগ্রহ করবে এ কমিটি।

এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক মিয়া ইনামুল হক সিদ্দিকী বলেন, যারা এভাবে ত্রুটিযুক্ত বই দেবেন তাদের অবশ্যই সে বইগুলো নতুন করে দিতে হবে। এ ছাড়া এদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ডের সুযোগ রয়েছে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033309459686279