উচ্চ মাধ্যমিক বা এইচএসসি শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর স্বপ্ন থাকে দেশের বড়ো ও উঁচুমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের জায়গা করে নেওয়ার। এক্ষেত্রে দেশের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর স্বপ্ন থাকে দেশের বড়ো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার। বুধবার ইত্তেফাকের এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধনটি লিখেছেন অধ্যাপক ড. আব্দুর রব।
স্বাভাবিক ভাবে এই স্বপ্ন থাকাই উচিত। তবে যথার্থ কারণেই বড়ো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা সীমিত। এই বাস্তব প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার ক্ষেত্রে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আইইউবিএটির প্রতিষ্ঠাতা, শিক্ষাবিদ এম আলিমউল্যা মিয়ান।
এর ধারাবাহিকতায়ই বাংলাদেশ সরকার ১৯৯২ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করেন। আইনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল— যে সকল ছাত্রছাত্রী ভর্তির যোগ্য অথচ আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ার কারণে উচ্চশিক্ষা হতে বঞ্চিত তাদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া। এই আইনের অধীনে বর্তমানে ১০৪টি বেসরকারি বিশ্বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে ভালো ক্যারিয়ার গাড়ার জন্য। শুরুতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের বিষয়ে নিয়োগকারী সংস্থাগুলোর কিছুটা অনীহা থাকলেও বর্তমানে সেই অনীহা নাই বললেই চলে। কেননা ইতিমধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকরা তাদের কর্মদক্ষতা, মেধা, শ্রম ও নিয়মানুবর্তিতায় একথা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে যে, তারা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের হতে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক স্নাতক ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন পদে উন্নীত হয়েছে এবং সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছে। এছাড়াও অনেক স্নাতক বিসিএস ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা যদি বলি— আমরা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের চাকরির উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের পেশাবিষয়ক কর্মশালা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকি। তাই পাশ করার পরপরই আইইউবিএটির স্নাতকদের চাকরিতে প্রবেশ করা সহজ হয়ে যায়। এছাড়াও শেষ সেমিস্টারে চার মাসের ইন্টার্নি শিক্ষার্থীদের চাকরি উপযুক্ত করে থাকে।
অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা হয়। যেমন আইইউবিএটির প্রতিষ্ঠাতা এম আলিমউল্যা মিয়ান রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে কৃষি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ব্যবসায় প্রশাসনসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকগণ বিভিন্ন গবেষণায় নিয়োজিত আছেন।
এখানে শিক্ষার্থীরাও নানা বিষয়ে গবেষণা করে থাকেন। কিছু দিন আগেই আইইউবিএটির যন্ত্রকৌশল বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র তৈরি করেছেন একটি সৌরচালিত গাড়ি। মূল শিক্ষার মতোই আমরা সহশিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
মোটকথা হলো সুযোগ-সুবিধার দিক দিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনো অংশেই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিছিয়ে নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাসে ভর্তি হতে হবে।
অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, উপাচার্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)