কেমন জানি অসহায় বোধ করি: মুহম্মদ জাফর ইকবাল - Dainikshiksha

কেমন জানি অসহায় বোধ করি: মুহম্মদ জাফর ইকবাল

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আমি সিলেটে থাকি, সুনামগঞ্জের খুব কাছে। হাওর আমার খুব প্রিয় জায়গা, পুরো বর্ষার সময় উথালপাথাল পানিতে নৌকা ভাসিয়ে দিয়ে সেখানে বসে হাওরের সৌন্দর্য দেখার মাঝে অন্য এক ধরনের বিস্ময়কর অনুভূতি রয়েছে। শীতের সময় এই এলাকা আবার শুকিয়ে যায়, তখন সেখানে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। দেখে বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যাই, পৃথিবীর আর কোথাও এ রকম বিচিত্র ভূ-প্রকৃতি পাওয়া যায় কি না আমি জানি না।

শীতের সময় হাওর এলাকার কথা মনে হলেই আমার বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের কথা মনে পড়ে। তিনি হাওর এলাকায় থাকতেন, যখন বেঁচে ছিলেন তখন তাঁর সঙ্গে আমার অনেকবার দেখা হয়েছে। আমরা সবাই তাঁর বাউলগানের কথা জানি। কিন্তু তাঁর যে অসাধারণ স্মৃতিশক্তি ছিল সেটা আমরা অনেকে জানি না। মনে আছে, একবার কোনো একটি অনুষ্ঠানের আগে সুনামগঞ্জের সার্কিট হাউসে তাঁর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি, তখন তিনি কবিতার মতো করে তাঁর লেখা সব গান আমাদের শুনিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি অবাক বিস্ময়ে তাঁর দিকে তাকিয়েছিলাম।

বেশ কিছুদিন আগে একবার শাহ আবদুল করিমের বাড়িতে একটি বাউল সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজকরা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে রওনা দিয়েছি। কাছাকাছি গিয়ে আবিষ্কার করলাম সেখানে গাড়ি যায় না। একজন আমাকে মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে নিয়ে যেতে রাজি হলেন, আমি হাওরের শুকনো মেঠোপথে মোটরসাইকেলের পেছনে বসে গিয়েছি। কী অপূর্ব এক অভিজ্ঞতা, সেখানে শাহ আবদুল করিমের সঙ্গে আমার শেষ দেখা।

এই বিস্তৃত হাওরাঞ্চল এখন পানির নিচে। সময়ের আগে উজান থেকে পানির ঢল এসে পুরো এলাকা ডুবিয়ে দিয়েছে। আর দুই সপ্তাহ সময় পেলেই বোরো ধানের ফসল কৃষকরা ঘরে তুলতে পারত, সেই সময়টুকু তারা পায়নি। যাদের গোলা ভরা ধান থাকতে পারত তারা চোখের পলকে নিঃস্ব হয়ে গেছে। শুধু যে ধান গেছে তা নয়, ধানের পর গেছে মাছ, তারপর   গেছে হাঁস। এই এলাকার মানুষের ওপর দুর্যোগের পর দুর্যোগ নেমে এসেছে। আমি পত্রপত্রিকায় খবরগুলো পড়ি এবং কেমন জানি অসহায় বোধ করি।

সেদিন এই এলাকার দুজন মানুষ আমার কাছে এসেছেন, বন্যা নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। এরপর আমার কাছে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়েছেন। কাগজটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের ২২ নম্বর ধারা। বন্যায় তলিয়ে যাওয়া এলাকার মানুষেরা তাদের অঞ্চলটিকে দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পর এ মন্ত্রণালয়ের সচিব এলাকার মানুষদের ‘সস্তা’ বক্তব্য দেওয়ার জন্য বকাবকি করে বলেছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের ২২ নম্বর ধারায় লেখা আছে, কোনো এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করার আগে সেই এলাকার অর্ধেক মানুষকে মারা পড়তে হবে! কী ভয়ংকর একটি কথা। কথা এখানেই শেষ হয়ে গেলে রক্ষা ছিল; কিন্তু সচিব মহোদয় এখানেই কথা শেষ করেননি, যাঁরা দুর্গত এলাকা ঘোষণার কথা বলেছেন, ‘তাঁরা কিছুই জানেন না, না জেনে কথা বলছেন’ সেটা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। এরপর বলেছেন, এই এলাকায় একটি ছাগলও মারা যায়নি! ঠিক কী কারণ জানা নেই। এত বড় একটা বিপর্যয়কে ছাগলের মৃত্যুর মতো এত ছোট বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করে বিষয়টি হাস্যকর একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার মাঝে এক ধরনের মমতাহীন অসম্মান প্রকাশ করার ব্যাপার আছে। যারা এ ভিডিও দেখেছে তারা সবাই এই অসম্মানটুকু অনুভব করবে। আমি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের ২২ নম্বর ধারাটি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েছি। অর্ধেক মানুষ মরে যাওয়ার কোনো কথা সেখানে নেই। সচিব মহোদয় স্থানীয় মানুষেরা কিছু জানে না বলে তাদের বকাবকি করেছেন অথচ দেখা যাচ্ছে আসলে তিনি নিজেই ব্যাপারটি জানেন না। কোনো কিছু না জেনে সে বিষয়টি নিয়ে খুব জোর গলায় কথা বলার এ ভিডিও নিশ্চিতভাবে সচিব মহোদয়ের কর্মজীবনের একটি বড় কালিমা হয়ে থাকবে।

আমাদের দেশের মানুষের মতো এত কষ্টসহিষ্ণু মানুষ সারা পৃথিবীতে আর কোথাও আছে কি না আমার জানা নেই। এ দেশের মানুষ অসংখ্যবার ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, বন্যায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে; কিন্তু প্রতিবার তারা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এবারও তারা নিশ্চয়ই মাথা তুলে দাঁড়াবে; কিন্তু সেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর জন্য যেটুকু সাহায্যের দরকার তার সবচেয়ে বড় অংশটি হচ্ছে তাদের জন্য এক ধরনের মমতা। ছাগলের মৃত্যুর উদাহরণ দেওয়া হলে সেই মমতাটুকু প্রকাশ পায় না।

আমি পত্রপত্রিকায় পড়ে দেখার চেষ্টা করছি এই বন্যাপ্লাবিত এলাকায় কী ধরনের সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। একটি সময় ছিল, যখন বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল দুর্বল। এখন আর সেই অবস্থা নেই। দুর্গত এলাকা বলে ঘোষণা করা হোক আর না হোক, এই দুর্গত মানুষগুলোর পাশে সরকার ও দেশ এসে দাঁড়াবে, সেই আশাটুকু নিশ্চয়ই করতে পারি।

২.

সেদিন বিকেলবেলা হঠাৎ করে একজন সাংবাদিক আমার কাছে এসেছেন, হামিদ মীর নামে একজন পাকিস্তানি সাংবাদিক তাঁর বাবাকে দেওয়া পদকটি ফিরিয়ে দিতে যাচ্ছেন—এ ব্যাপারে আমার কী মন্তব্য সেটি তিনি জানতে চান। আমি ভাসা ভাসাভাবে পাকিস্তানের সাংবাদিক হামিদ মীরের নাম শুনেছি; কিন্তু তাঁর বাবার পদক ফিরিয়ে দেওয়া সম্পর্কে তখনো আমি কিছুই জানি না। তাই আমি কোনো মন্তব্য দিতে পারলাম না।

রাতে খবর পড়ে জানলাম একাত্তরে বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তানি নৃশংসতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যে কয়জন মানুষ প্রতিবাদ করেছিল তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন এই সাংবাদিকের বাবা। বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে অন্য অনেক বিদেশি বন্ধুর সঙ্গে পাকিস্তানের এই সাহসী মানুষটিকে সম্মানিত করেছে। তিনি বেঁচে নেই বলে তাঁর ছেলে হামিদ মীর তাঁর বাবার পক্ষে এ সম্মানটুকু গ্রহণ করেছিলেন।

হামিদ মীরের ভাষায় পদকটি দিয়ে তাঁকে আসলে প্রতারণা করা হয়েছে। কারণ পদকটি দেওয়ার সময় তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করবে। কিন্তু সম্পর্ক ভালো হওয়া দূরে থাকুক, সম্পর্ক দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এর প্রতিবাদে হামিদ মীর পদকটি ফিরিয়ে দিতে যাচ্ছেন।

পুরো ব্যাপারটার মাঝে এক ধরনের তামাশা আছে, সেটা সবাই লক্ষ করেছে কি না জানি না। আমরা নিজের চোখে একাত্তরে পাকিস্তানের নৃশংসতা দেখেছি বলে এই বর্বর রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের ভেতরে প্রবল এক ধরনের বিতৃষ্ণা আছে। যদি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে হতে একসময় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক কেটে দেওয়া হয়, আমি সম্ভবত সবার কাছে মিষ্টি বিতরণ করব। তবে আমার ইচ্ছা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা হয় না, তাই চট করে মিষ্টি বিতরণের সুযোগ পাব বলে মনে হয় না।

কিন্তু সম্পর্ক যে খারাপ হয়েছে, সেটি সবাই নিশ্চয়ই লক্ষ করেছে। সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণটিও নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যায়নি। আমাদের দেশের যুদ্ধাপরাধীদের আমরা বিচার করে শাস্তি দিয়েছি। সেই যুদ্ধাপরাধীদের জন্য দরদে উথলে পড়ে পাকিস্তান তাদের পার্লামেন্টে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবের পরও যদি হামিদ মীর বুঝতে না পারেন কেন সম্পর্কটি খারাপ হয়েছে, তাহলে তাঁর আসলে সাংবাদিকতার পরিবর্তে অন্য একটি কাজ শুরু করা উচিত!

একজন সাংবাদিক এই সহজ বিষয়টি বুঝতে পারছেন না, আমার সেটা বিশ্বাস হয় না। আমার ধারণা, বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর মাখামাখির কারণে সে দেশের মিলিটারি কিংবা অন্য কেউ তাঁকে প্রাণের ভয় দেখিয়েছে এবং দুর্বল মানুষ প্রাণের ভয়ে যেটা করে তিনি সেটাই করেছেন। বাংলাদেশকে অপমান করার চেষ্টা করে নিজের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। দোয়া করি তিনি প্রাণে বেঁচে থাকুন।

আমার অবশ্য আরো একটি বিষয় নিয়ে খানিকটা বিভ্রান্তি রয়েছে, এই সম্মাননা পদক হামিদ মীরকে দেওয়া হয়নি, তাঁর বাবাকে দেওয়া হয়েছে। পদকটি যদি ফিরিয়ে দিতে হয়, তাঁর বাবা সেটি ফিরিয়ে দিতে পারেন, হামিদ মীরের সেই অধিকার আর ক্ষমতা কোনোটিই নেই। আমরা তাঁর বাবা সম্পর্কে যেটুকু জানি, তার থেকে বলতে পারি তিনি কখনোই এই পদকটুকু ফিরিয়ে দিতেন না। যে মানুষ একাত্তরের সেই দুঃসময়ে পাকিস্তানের মতো বর্বর একটি দেশে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিবাদ করেছেন, নিশ্চয়ই এখনো তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে কথা বলতেন। শুধু তা-ই নয়, আমরা আমাদের দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি, পাকিস্তান কোন সাহসে তাদের পার্লামেন্টে এর বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব নেয়, তিনি নিশ্চয়ই সেটারও প্রতিবাদ করতেন। আমার প্রশ্ন তাঁর ছেলে পুঙ্গবকে কে অধিকার দিয়েছে তাঁর সম্মানিত বাবার নাম ভাঙিয়ে বাংলাদেশকে অপমান করার চেষ্টা করার?

৩.

শহীদ মিনারে কাজী আরিফের মৃতদেহের কফিন এবং তাকে ঘিরে তার আপনজনরা দাঁড়িয়ে আছে, দৃশ্যটি আমি চোখের সামনে থেকে সরাতে পারছি না। বহুদিন তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। সে অসুস্থ, চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছে সেটাও আমি জানতাম না। তাই হঠাৎ করে তার মৃত্যু সংবাদটি শুনে আমি খুব বড় একটা আঘাত পেয়েছি।

কাজী আরিফ আমার একেবারে ছেলেবেলার বন্ধু। আট বছর বয়সে আমি বান্দরবান থেকে চট্টগ্রামে এসে সেখানকার পিটিআই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম, যেখানে আমার কাজী আরিফের সঙ্গে পরিচয়। আমরা দুজনই তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। (কাজী আরিফকে আমরা অবশ্য কখনোই কাজী আরিফ নামে ডাকিনি—তাকে তার ডাকনাম তৌহিদ বলে ডেকেছি। )

শৈশবে কাজী আরিফকে নিয়ে আমার যে স্মৃতিটি এখনো সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল, সেটি হচ্ছে ক্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে সে কবিতা আবৃত্তি করছে। আমি এক ধরনের বিস্ময় নিয়ে তাকে কবিতা আবৃত্তি করতে ‘দেখতাম’—শুনতাম না বলে দেখতাম লিখেছি, তার একটা কারণ আছে। সেই অতি শৈশবেই কাজী আরিফ অবিশ্বাস্য আন্তরিকভাবে কবিতা আবৃত্তি করত এবং জোর গলায় সে যখন কবিতা আবৃত্তি করত তখন তার গলার একটা রগ রীতিমতো ফুলে উঠত এবং সেটাই ছিল আমাদের কাছে সবচেয়ে দর্শনীয় বিষয়। সে যে বড় হয়ে বাংলাদেশের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ আবৃত্তিশিল্পী হবে, সেটি ক্লাস থ্রিতেই আমাদের অনুমান করা উচিত ছিল।

আজ থেকে অর্ধশতাব্দী থেকেও বেশি সময় আগে চট্টগ্রাম শহরটি অন্য রকম ছিল। আমরা ছোট ছোট শিশু চট্টগ্রাম শহরের আনাচকানাচে ঘুরে বেড়াতাম, কেউ কখনো তা নিয়ে দুর্ভাবনা করত না!

পিটিআই স্কুল থেকে পাস করে কলেজিয়েট স্কুলে, সেখান থেকে আমি বগুড়ায় চলে এলাম এবং কাজী আরিফের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। তার সঙ্গে আবার যোগাযোগ হলো স্বাধীনতার পর। সে আর্কিটেকচারে ভর্তি হয়েছে, আমি পদার্থবিজ্ঞানে। বহুদিন পর প্রথম যখন তার সঙ্গে দেখা হলো, সে আনন্দে হা হা করে হেসে বলল, ‘মনে আছে, তুমি যখন স্কুলে ছিলে তখন তুমি পোকাকে বলতে পুকা!’ আমার মনে ছিল না; কিন্তু আমি তাকে অবিশ্বাস করিনি—আমরা নেত্রকোনার মানুষ পোকাকে পুকা বলি, সূর্যের আলোকে সূর্যের আলু বলি, এটি নতুন কিছু নয়!

মুক্তিযোদ্ধা কাজী আরিফ যখন বাংলাদেশের একজন সর্বশ্রেষ্ঠ আবৃত্তিশিল্পী হয়ে উঠছে তখন আমি যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে হঠাৎ একদিন তার সঙ্গে দেখা। জানতে পারলাম সে যুক্তরাষ্ট্রে চলে এসেছে। নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক এলাকায় থাকে, মাঝেমধ্যেই তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়। একবার নির্মলেন্দু গুণ যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে এলেন, আমি আর আমার স্ত্রী কাজী আরিফ আর নির্মলেন্দু গুণকে নায়াগ্রা ফলসে নিয়ে গেলাম। ফিরে আসার সময় দীর্ঘ ভ্রমণে সবাই ক্লান্ত, আমি গাড়ি চালাচ্ছি। আমার স্ত্রী বাচ্চা দুটিকে দেখভাল করছে। তখন হঠাৎ গাড়ির পেছনে বসে থাকা কবি নির্মলেন্দু গুণ ও কাজী আরিফ কবিতা আবৃত্তি করতে শুরু করল। একজন একটি শেষ করে তখন আরেকজন শুরু করে।

গভীর রাত, নির্জন পথ, গাড়ির হেডলাইট হাইওয়ের একটুখানি পথ আলোকিত করে রেখেছে। দুই পাশে অরণ্য, তার মাঝে আমরা যাচ্ছি। গাড়ির পেছনে কবি নির্মলেন্দু গুণ ও কাজী আরিফ কবিতা আবৃত্তি করে যাচ্ছে। কবি নির্মলেন্দু গুণ তাঁর নিজের লেখা কবিতা গভীর মমতায় তাঁর নিজের মতো করে বলে যাচ্ছেন। কাজী আরিফের ভরাট কণ্ঠ, নিখুঁত উচ্চারণ, কবিতার জন্য গভীর ভালোবাসা—আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে থাকি।

এরপর কত দিন পার হয়ে গেছে, আমার এখনো মনে হয় অন্ধকারে গাড়ি চালাচ্ছি, পেছনের সিটে বসে আছে কাজী আরিফ, আমাদের কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়ে যাচ্ছে। আমরা আর তার কণ্ঠে কবিতা শুনতে পাব না। কাজী আরিফ, প্রিয় বন্ধু, বিদায়।

লেখক : অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0074269771575928