কোচিং, নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধই থাকছে প্রস্তাবিত সমন্বিত শিক্ষা আইনে। খসড়ায় অনেক কিছু সংযোজন-বিয়োজন হলেও এ বিষয়গুলো বেশ গুরুত্বের সঙ্গে রাখা হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও আইনের খসড়া পরীক্ষায় গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সভাপতি জাবেদ আহমেদ এ তথ্য জানান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগের খসড়ায় যেভাবে কোচিং বন্ধসহ নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধ ছিল, তা থাকছে সমন্বিত শিক্ষা আইনেও। মঙ্গলবার (১০ জুলাই) আইনের খসড়া পরীক্ষায় গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির বৈঠক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, শিক্ষা সংক্রান্ত যত আইন আছে, সব আইন সংযোজন করতে হবে আইনের খসড়ায়। অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, মন্ত্রিসভার দেওয়া পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী আমরা সব আইনকে সংযোজন করে খসড়া চূড়ান্ত করব। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রস্তাবিত আইনের সঙ্গে সংশ্নিষ্ট যেসব আইন, বিধি, প্রবিধান ও রীতি রয়েছে, সেসব সমন্বয় করে আইন হবে। তবে এতে সময় লাগবে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, শিক্ষা সংক্রান্ত সব আইন সমন্বয় করে খসড়া চূড়ান্ত করতে তিন মাসেরও বেশি সময় লাগবে। বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, খসড়া চূড়ান্ত হলে তা যাবে মন্ত্রিসভায়। মন্ত্রিসভা চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে সংসদে যাবে। তত দিনে এ সরকারের মেয়াদ থাকছে না। অর্থাৎ বর্তমান সরকারের মেয়াদে শিক্ষা আইন তৈরি করা আর সম্ভব নয়।
গতকাল বৈঠকের পর অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, মন্ত্রিসভা বলেছে, খসড়া আইনটি কম্প্রিহেন্সিভ (সম্পূর্ণ) না। দেশে শিক্ষা সংক্রান্ত ৫০টির মতো আইন রয়েছে। যদি শিক্ষা আইন করতে হয়, তাহলে ওইসব আইনকে সমন্ব্বয়, সংযোজন করতে হবে। সংশ্নিষ্ট যত আইন রয়েছে, আমরা সেগুলো সমন্বয় করে খসড়া তৈরি করব।
'জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০' অনুযায়ী ২০১১ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা আইন করার উদ্যোগ নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০১২ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা আইনের প্রথম খসড়া তৈরি হয়। সংযোজন-বিয়োজন শেষে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে ৫ আগস্ট জনমত যাচাইয়ের জন্য খসড়াটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এর পর সংশ্নিষ্টদের মতামত নিয়ে মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হলেও তিন দফা পর্যবেক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠায় মন্ত্রিসভা। শেষবার ১২টি পর্যবেক্ষণ দিয়ে শিক্ষা সংশ্নিষ্ট সব আইন সমন্বয়, সংযোজনসহ নতুন করে সমন্বিত আইন করতে বলা হয়। মন্ত্রিসভার ওই পর্যবেক্ষণের পর গত ২৬ এপ্রিল শিক্ষা আইনের খসড়া পরীক্ষায় একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।