প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা থাকলেই শুধু আন্দোলন। তাই কোটার দরকার নেই। কোটা না থাকলে আন্দোলন নেই, সংস্কারও নেই। তিনি বলেন, যদি কেউ কোটা চায়, তাহলে এখন কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে, তখন ভেবেচিন্তে দেখা হবে কী করা যায়? এরপর যদি কেউ কোনো কোটা চায়, তাহলে তাকে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোটা দেওয়া হবে না।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন। বুধবার (৩ অক্টোবর) বিকেল চারটায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে তাঁর সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সফরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরাই তাঁর লক্ষ্য ছিল। লিখিত বক্তব্যের পর তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিই যখন কোটা চায় না, তখন কোটা রেখে লাভ আছে? সে জন্য আমি বলছি, কোটা থাকলে শুধু আন্দোলন। তাহলে আর কোটার দরকারই নাই, আন্দোলনও নাই, সংস্কারও নাই। যখন আমি বললাম কোটা থাকবে না, তখন বলে বাতিল না সংস্কার চাচ্ছি। আগে চাইল বাতিল, এরপর চাইল সংস্কার। কারণ কী? কোটা যদি না থাকে, তাহলে সংস্কারের প্রশ্ন উঠবে না। যদি কারও কোটা চাই, তাহলে এখন কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে, তখন ভেবেচিন্তে দেখব কী করা যায়? এপর যদি কেউ কোনো কোটা চায়, তাহলে তাকে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোটা দেব না।’
প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মুক্তিযোদ্ধা বা অনগ্রসর, তাদের জন্য জাতির জনক কোটাপদ্ধতি করে দিয়ে গিয়েছিলেন। কোটা যদি পূরণ না হয়, এর জন্য আন্দোলন লাগেনি। যখনই কোটা পূরণ হতো না, আমি প্রতিবছর কোটা রিলাক্স করে দিতাম। তারপর একবার বললাম যে বারবার না এনে এটাকে একটা স্ট্যান্ডার্ড নিয়ম দাঁড় করে ফেলো। যেখানে কোটা পূরণ না হবে, জায়গা যেন ফাঁকা না থাকে, সেখানে তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। সেভাবে কিন্তু চলছিল। এরই মধ্যে এল আন্দোলন।’ এ সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ছাত্রী হল থেকে ছাত্রীদের বেরিয়ে আসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে যেসব স্কুল-কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠান মেরামত করা হচ্ছে। এ জন্য বিদেশি সংস্থাগুলোও সাহায্য করছে। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার হচ্ছে সব কথায় হ্যাঁ হ্যাঁ বলে, কাজের বেলায় করে না। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নেপালে দেখা হলো, তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম তিনি বললেন আমরা তো রেডি। যেই আমরা পাঠাতে চাই, তখন কোথায় যেন একটা বাধা তাদের। তবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সাধারণ পরিষদে ভাষণের আগে ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব ‘পূর্ণ সমর্থন ও সব ধরনের সহযোগিতার’ প্রতিশ্রুতি দেন। ঢাকা থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর রওনা হয়ে দুদিন লন্ডনে কাটিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। গত সোমবার তিনি দেশে ফেরেন।