সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোন ধরনের কোটা থাকবে না বলে আবারও স্পষ্ট করল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে কোটা ব্যবস্থা আগের মতই বহাল থাকবে। সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল নিয়ে সৃষ্ট অস্পষ্টতা দূর করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৯ জুলাই এ বিষয়ে চিঠি সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ৩০ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করে চিঠি পাঠানো হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। কোটা নিয়ে সৃষ্ট বিভান্তিদূর করতে সে চিঠিই মন্ত্রণালয়গুলোতে অগ্রায়ন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চিঠিতে বলা হয়, ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণির) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। এই পদসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করার পরিপত্র জারি করার পর আর কোটা পদ্ধতি বিদ্যমান নেই। তবে, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাব পূরণ করা সম্ভব না হলে প্রাপ্যতা অনুযায়ী সাধারণ প্রার্থীদের মধ্যে থেকে মেধা তালিকায় শীর্ষে অবস্থানকারীদের দ্বারা পূরণ করতে হবে।
এর আগে মু্ক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রয়েছে বলে অনেকের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পরে। তাই, কোটা বাতিল করে সরকারের পরিপত্র জারি করার পরও কোটা বহাল থাকে না থাকা বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। এ বিভ্রান্দি দূর করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আবারও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ও সংশ্লিষ্টদের এ চিঠি পাঠিয়েছ।
প্রসংগত, গত বছর মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোটা পদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করেছে সরকার। গত ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহম্মদের স্বাক্ষরিত জারি করা এই পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হল। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সরকার সকল সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ জারি করা কোটা পদ্ধতি সংশোধন করল।’ এর আগে পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।
কোটার বাতিলের দাবিতে কয়েক মাস আগে আন্দোলন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেয় সরকার। ওই কমিটি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা সম্পূর্ণ তুলে দেওয়ার সুপারিশ করে, যা মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়।