টাকার বিনিয়মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া যায় না উল্লেখ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ‘কোটি টাকা দিয়েও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া যাবে না, কেবলমাত্র মেধার ভিত্তিতেই প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ হয়। যারা টাকা দিয়ে চাকরি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ধরনা দেন, দেন-দরবার করেন তারা টাকাটাই হারাবেন, চাকরি পাবেন না। কিছু কুচক্রী মহলের উদ্দেশ্যই থাকে ধোঁকা দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা।’
সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ‘মীনা দিবস-২০১৮’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাসচিব আবু হেনা মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে কোয়ালিটি শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। সরকার একটি নির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে খুব বেশি দেরি নেই। আমরা মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতের দিকে হাঁটছি। বিদেশে অশিক্ষিত নয়, শিক্ষিত মানবসম্পদ পাঠাতে চাই, যেন বিদেশে গিয়ে মাথা উচুঁ করে চলতে পারে।’
আরও পড়ুন : দুই কোটি টাকা দিলেও প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ মিলবে না: গণশিক্ষা মন্ত্রী
মীনা চরিত্র শিশুদের আদর্শ চরিত্র উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মীনা চরিত্র নারী শিশুদের একটি স্বপ্নের চরিত্র। মীনা নারী জাতির মহানায়ক। মীনা যুগের পর যুগ দশ বছর বয়সে থেমে আছে, আমরা তাকে বড় হতে দেব না। কারণ, মিনাকে এ বয়সেই মানায়। মীনা অপ্রতিরোধ্য, মীনা সকল নারী শিশুর আদর্শ।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নবনিযুক্ত সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অনেকদূর এগিয়েছে। স্বাক্ষরতার হার আগের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। মায়েরা আগের চেয়ে অনেক সচেতন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মিড ডে মিল চালু করার পর দুপুরে শিশুর সঙ্গে বসে মায়েরা খাবার খায়। এতে তাদের মধ্যে মমত্ববোধ তৈরি হয়, শিশুরাও ক্লাসে মন দিতে পারে। আমি এ মন্ত্রণালয়ে নতুন এসেছি। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ কাজ করে যাব।’
অনুষ্ঠানে শিশুদের অংশগ্রহণে মীনা বিষয়ক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও আয়োজন করা হয়েছিল পাপেট ও মাপেট শো এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান।
জনপ্রিয় কার্টুন “মীনা” নামের বালিকা চরিত্রটি মেয়ে শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্ছার। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে একজন ১০ বছর বয়সী বালিকা হিসেবে মীনা চরিত্রের সৃষ্টি। সমাজের কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, বিভেদ ও বৈষম্য দূর করে সমৃদ্ধ জাতি গঠনের বার্তাসমূহ বিনোদনমূলক কার্টুন চরিত্র মীনার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। মীনা চরিত্রটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল তথা দক্ষিণ এশিয়ার মেয়ে শিশুদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি বালিকা চরিত্র। ইতোমধ্যে অনেক বিষয়ে মীনা কার্টুন পর্ব ও মীনা বই তৈরি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে চরিত্রটি শিশু ছাড়াও সব বয়সের মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে।
১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে থেকে দেশব্যাপী মীনা দিবস উদযাপন করছে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা। প্রতি বছর ২৪ সেপ্টেম্বর দিবসটি উদযাপিত হয়।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও মীনা দিবস উদযাপন উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শোভাযাত্রা, মীনা বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, যেমন খুশি তেমন সাজো ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। পরে মন্ত্রী বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরন করেন।