নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের অভাবে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। প্রচণ্ড শীতে খোলা মাঠে ক্লাস করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
অন্যদিকে স্থান সংকুলান না হওয়ায় শ্রেণীকক্ষেও তাদের গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে তারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
উপজেলার রয়না ভরট সরকারবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ ও বেঞ্চ সংকটে খোলা আকাশের নিচে সবুজ ঘাসের ওপর বসে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। বিদ্যালয় ভবনের অবস্থাও জরাজীর্ণ। অধিকাংশ কক্ষের জানালা ভাঙা।
বিদ্যালয়ের টিউবওয়েল মাঝেমধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে। তখন দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য দুটি টয়লেট থাকলেও তা ব্যবহারের অনুপযোগী ও অস্বাস্থ্যকর। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফল বরাবর ভালো হলেও এসব কারণে বিদ্যালয়বিমুখ অনেক শিক্ষার্থী।
বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক সংলগ্ন বিদ্যালয়টি ১৯৯৩ সালে স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০০। স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত টাকায় বিদ্যালয়ের আধাপাকা কয়েকটি শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ করা হয়।
তবে শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব কক্ষে আর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠার ২৬ বছরেও সরকারিভাবে কোনো ভবন বরাদ্দ না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকদের বসার জন্য একটিমাত্র কক্ষ থাকলেও সেখানে আবার অফিসের কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে। অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জলি ও সুবর্ণা জানায়, প্রচণ্ড শীতে খোলা মাঠে ক্লাস করতে খুব কষ্ট হয়। মাঝে মাঝে টয়লেটের দুর্গন্ধে স্কুলে টিকা দায় হয়ে পড়ে।
প্রধান শিক্ষক খাদেমুল ইসলাম বলেন, শ্রেণীকক্ষ ও বেঞ্চের অভাবে বাধ্য হয়ে কখনও মাঠে, কখনও বারান্দায় পাঠদান করতে হচ্ছে। বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান না হওয়ায় আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। বিদ্যালয়ে সরকারিভাবে একটি ভবন বরাদ্দ দিলে সবাই উপকৃত হতো।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মোবারক হোসেন বলেন, ভালো রেজাল্ট করা সত্ত্বেও শ্রেণীকক্ষ সংকটে এলাকার অনেক শিক্ষার্থী অন্য বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তি হচ্ছে। বিদ্যালয়ে অবিলম্বে একটি ভবন বরাদ্দ দেয়ার জন্য তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।