পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়ে এবং সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে পটুয়াখালীর গলাচিপার যেখানে-সেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে ইটভাটা। জনবহুল স্থান, বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশে পাশে অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটার কারণে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। এর বিষময় প্রভাব পড়ছে শিশু-কিশোর ছাত্রছাত্রীদের ওপরও।
উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ হোগলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কেরাতুল কোরআন মাদরাসার পাশে গড়ে তোলা হয়েছে হানিফ উল্লাহ ফাউন্ডেশন ব্রিকস ফিল্ড নামের একটি ইটভাটা। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী পরিবেশ দূষণ ছাড়াও এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে মোস্তফা কামাল অভিযোগ করেন, ‘গলাচিপা উপজেলায় ডাকুয়া ইউনিয়নের হোগলবুনিয়া গ্রামের দক্ষিণ হোগলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এর ২০০ মিটার দূরে কেরাতুল কোরআন মাদরাসা রয়েছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় চারশত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুইটির মাঝামাঝি এবং সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির বনাঞ্চল ঘেঁষে গড়ে তোলা হয়েছে হানিফ উল্লাহ ফাউন্ডেশন ব্রিকস ফিল্ড নামে একটি ইটভাটা। গত বছর যখন ইটভাটায় উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ইট পোড়ানোর কাজ শুরু হয় তখন এর আধা কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। যার কারণে এর পাশে অবস্থিত বিদ্যালয়, মাদরাসা ও এলাকাবাসীর শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হয়। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের সমস্যা হয় বেশি।
এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার কমে যায়। গলাচিপা নদীর ভাঙনে হোগলবুনিয়া গ্রামের অনেক জমিজমা বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে ঘেছে। অথচ নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় মাটি কাটার মেশিন স্কেভেটর দ্বারা প্রতিনিয়ত নদীর পাড় কেটে ফসলি জমি নষ্ট করে ইট ও ইটভাটায় বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে। এ কারণে নদী ভাঙন আরও তীব্র রূপ ধারণ করছে। এছাড়া বন বিভাগের গাছ কেটে ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইটভাটার মালিক মো. হানিফউল্লাহ জানান, বাউফল উপজেলার তার এলাকায় কয়েকটি স্কুল, কলেজ, মাদরাসার ভবন তৈরির জন্য ইট প্রয়োজন। তাই সাময়িকভাবে এই ইটভাটাটি স্থাপন করা হয়েছে, এ মৌসুমে ইট তৈরি করে এটি বন্ধ করা হবে। আর এতে পরিবেশের তেমন ক্ষতি হবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌছিফ আহমেদ জানান, অভিযোগ পেয়েছি তবে জনসাধারণের ক্ষতি হয় এমন কাজ করা যাবে না। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।