শিক্ষার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সঠিক ও যথার্থ জ্ঞান অর্জন করা। শিক্ষার্থীরা সেই অর্জিত জ্ঞান ও শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে দেশ ও দশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন সেটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আজ সেই মহান লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছেন। আর এর জন্য একদিকে যেমন আমাদের শিক্ষা ও পরীক্ষা পদ্ধতি দায়ী, অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রভাব, অভিভাবকদের অসচেতনতা, শিক্ষার্থীদের অমনোযোগিতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ইত্যাদিও অনেকাংশে দায়ী। শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে আরও জানা যায়, প্রথমেই আমাদের ভুল পরীক্ষা পদ্ধতি কী সেটার দিকে একটু দৃষ্টিপাত করা যাক। পিইসি, জেএসসি, এসএসসি, বিসিএস, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি, বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষাসহ বেশ কিছু পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বহু নির্বাচনী শিরোনামে যে অংশ থাকে সেটি হচ্ছে পরীক্ষার নামে সূক্ষ্ম চাতুরী, প্রতারণা; পরীক্ষাকে সহজ করার নামে এটা করা হয়। আমার মতে, একটি প্রশ্নের তিনটি ভুল ও একটি সঠিক উত্তর দিয়ে শিক্ষার্থীদের একদিকে ভুল তথ্য শেখানো যেমন অপরাধ, তেমনি সঠিক উত্তর জানিয়ে দেওয়াও অপরাধ।
আমরা বই পড়ে কী শিখলাম তা পরীক্ষা করার জন্য প্রশ্নপত্রে উত্তরের অপশন রাখার প্রয়োজন কী? সত্যিই যদি আমাদের স্মরণে থাকে তা এমনিতেই লিখতে কিংবা বলতে পারব। এ জন্য আমার মতে, এমসিকিউ (বহু নির্বাচনী) পদ্ধতি বাতিল করে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন পদ্ধতি চালু করা অত্যন্ত জরুরি। দ্বিতীয়ত, প্রশ্ন ফাঁস আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরীক্ষা পদ্ধতিকে বাতিল করতে হবে। প্রশ্ন ফাঁস রোধে জোরদার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয়ত, আমাদের পাঠ্যপুস্তকগুলো যুগোপযোগী করতে হবে, ঢেলে সাজাতে হবে। পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নের সঙ্গে মিল রেখে নমুনা প্রশ্ন পাঠ্য বইয়ে সংযুক্ত করতে হবে। সব শেষে বছরে একটি কিংবা দুটি নয়, বছরে ১২টি চূড়ান্ত পরীক্ষা প্রবর্তন করতে হবে। তবেই আমরা প্রকৃত শিক্ষার্থীর সন্ধান পাব।
লেখক : মো. ইলিয়াছ হোসেন, খটখটিয়া, মহানগর, রংপুর।