নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে হত্যা ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার দুইজন হলেন: আহমাদ হোসাইন এবং নাজমুস সাকিব। এদের মধ্যে সাকিব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবের শিক্ষার্থী। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এবং ফার্মগেটের রাজাবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে চারজন ছাত্রের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং চারছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন আহমাদ হোসাইন ও নাজমুস সাকিব। তারা তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাস্তায় মেনে আসতে আহ্বান জানান।
সেদিন এই কথা ফেসবুক লাইভে এসে এবং সাক্ষাৎকারের মতো করে বানিয়ে বিভিন্ন আইডি থেকেই প্রচার করা হয়। আর এরপর স্কুল কলেজের পোশাক পরিহিত এবং ড্রেসছাড়া বেশ কিছু তরুণ ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা করে, সংঘর্ষ হয় দুই পক্ষে, ঝরে রক্ত।
আর এই কথা ছড়ানোর পেছনে যে অন্য উদ্দেশ্য ছিল, সেটাও স্পষ্ট। দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরে থেকে ফেসবুক লাইভে এসে সবাইকে রাস্তায় নেমে এসে সরকার উৎখাতের আহ্বানও জানানো হয়।
তবে সন্ধ্যায় ছাত্রদের দুটি প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয় ঘুরে এসে নিশ্চিত হয়, সেই প্রচার ছিল গুজব। আর এরপর থেকে তারা সড়কে অবস্থান ছেড়ে বাড়িতে ফিরে যায়।
সিআইডি কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল বলেন, ‘পল্টন থানায় দায়ের করা আইসিটি মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে সুষ্পষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে।’
এর আগে ফেসবুক লাইভে ছাত্র মৃত্যুর গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন অভিনেত্রী ও মডেল কাজী নওশাবা আহমেদ। দুই ছাত্রকে হত্যা মৃত্যু ও একজনকে চোখ তুলে নেওয়ার কথা বলে সবাইকে নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন তিনি। দুই দফা রিমান্ড শেষে তিনি এখন বন্দী অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি।
পুলিশ প্রধান জাবেদ পাটোয়ারি জানিয়েছেন, গুজব ছড়ানোর পেছনে তারা মোট ২১টি পোর্টাল চিহ্নিত করেছেন। তাদের সবার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।