গ্রেটা থানবার্গের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ‘আই এম গ্রেটা’ - দৈনিকশিক্ষা

গ্রেটা থানবার্গের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ‘আই এম গ্রেটা’

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

গ্রেটা থানবার্গ। মাত্র ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী। এই বয়সেই জলবায়ু আন্দোলন উপর ৯৭ মিনিটের একটি ডকুমেন্টরী তৈরী করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন পুরো বিশ্বে। আগামী ১৬ অক্টোবর সিনেমা হলে মুক্তি পেতে যাচ্ছে জলবায়ু সংকটের উপর গ্রেটার তৈরী ডকুমেন্টরী ‘আই এম গ্রেটা।’

স্টকহোমে বড় হওয়া অটিজম এই কিশোরী ইতিমধ্যেই জলবায়ু সংকট আর পরিবেশ আন্দোলনের জন্য বিশ্বে জনপ্রিয় হয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প, পোপ আর ডেভিড অ্যাটেনবারোর সহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে মর্যাদা পেয়েছেন। টাইম ম্যাগাজিনের ২০১৯ সালের পার্সন অফ দি ইয়ারও অর্জণ করেছেন গ্রেটা। গ্রেটার এই ডকুমেন্টরীতে বিশ্বে অটিজম ভ্রমণ পিপাসু শিশুদের জলবায়ু অ্যাক্টিভিটির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

জাতিসংঘে সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেসকে গ্রেটার আন্দোলনের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘রাজনৈতিক নেতারা আমাদের ব্যর্থ করেছেন – তবে এখন পরিবর্তন আসছে।’ ভ্যাটিকানে আমরা একটি বিশাল জনতাকে গ্রেটাতে অভ্যর্থনা করতে দেখেছি। এই সময় সবাই ‘গো গ্রেটা, গ্রহটিকে বাঁচান!’ বলে স্লোগান দিয়েছে।

ইউনাইটেডের একটি জলবায়ু সভায় যোগ দিতে গ্রেটাকে বহনকারী শূন্য-কার্বন নৌকাটি আটলান্টিক পাড়ি দেয়ার সময় ফ্লোটিলারা তার সাথে দেখা করতে এসেছে।
গেলো সপ্তাহে এই পর্যবেক্ষকের সাথে সাক্ষাতকারে গ্রেটা বলেন, “এই জলবায়ু সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য, আমাদের আলাদা মানসিকতা দরকার। আমার মতো লোকেরা – যাদের মধ্যে বিভিন্ন শারিরিক প্রতিবন্ধকতা সিনড্রোম এবং অটিজম রয়েছে, যারা সামাজিক নিয়মগুলো মানেন না তারা অনেক বিষয় এড়িয়ে যায়।

থানবার্গ বিশ্বাস করেন তার প্রতিবন্ধকতা তাকে বিশ্বের দিকে নজর দিতে এবং অন্যেরা কী করতে পারে না, কী দেখতে পারে, তা দেখতে সহায়তা করে। তিনি ছোট্ট কথাবার্তা এবং সামাজিককরণ অপছন্দ করেন, রুটিনমাফিক কাজে লেগে থাকতে এবং “লেজার-ফোকাসড” থাকতে পছন্দ করেন। তার বাবা সাবান্তে থুনবার্গ সর্বপ্রথম তাকে এমন কাজ করতে উৎসাহ প্রদান করেন।

গ্রেটার মা মেলিনা আর্নম্যান বলেন, প্রতিনিয়ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনে বৃদ্ধি পাওয়া ও এর ক্ষতিকার দিকগুলো গ্রেটা শৈশবে অনুধাবন করে। অটিজম আক্রান্ত হওয়ায় ১১ বছর বয়সে সে সাধারণ জীবন থেকে অনেকটাই সরে এসেছিলো। সবার সাথে কথা বলা আর খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো। ডুকমেন্টরিতে সেই সময়ের বিষয়ে গ্রেটা বলেছেন, তখন তার মনে হতে তিনি অনাহারে যেন মারা যাচ্ছেন।

সেসময় সে প্রায় এক বছর স্কুল থেকে দূরে ছিলেন গ্রেটা। তখন শুধুমাত্র নিজের মা, ছোট বোনের সাথে কথা বলতো সে। থানবার্গ তার ডকুমেন্টরিতে তার সেই কষ্টের দিনগুলোর কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বাচ্চারা তাকে এড়িয়ে চলতো। কোন পার্টি বা উৎসবে কখনো তাকে আমন্ত্রণ জানানো হতো না। আমি বেশিরভাগ আমার পরিবার আর প্রিয় কুকুরদের সাথে সময় কাটাতাম। আমার জীবন পরিবর্তনে তারা বড় ভূমিকা পালন করেছে।

থানবার্গ বলেন, বেশিরভাগ ডুকমেন্টরীতেই আমরা সুখী ব্যাক্তিদের জীবনী দেখতে পাই। কিন্তু তিনি তার ডুকমেন্টরীতে জীবনের কষ্টের কথা বলেছেন।
থানবার্গ বলেন, তার স্কুল থেকে দূরে থাকার দিনগুলোতে জলবায়ু নানান বিষয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি দেখতে পান সুইডিশ রাজনীতিবিদরা জলবায়ু বিষয়ে অনেক উদাসিন।

থানবার্গ মনে করেন, যখন সুন্দর একটি পৃথিবীর ভবিষ্যত নেই তখন আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষা দিয়ে কি হবে। সে সময় সে সোশ্যাল মিডিয়ায় জলবায়ু আন্দোলনের বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি শুরু করেন। তখন রিতিমতো সবুজ আন্দোলনের তারকা হয়ে উঠেন থামবার্গ।

তারপর থেকে তিনি নিউইয়র্কের জাতিসংঘের দেশগুলির সাথে জলবায়ু সংকট নিয়ে কথা বলেছেন। পোল্যান্ডের ক্যাটওয়াইসে ২৪ তম সিওপি জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ইউরোপীয় সংসদে গিয়েছেন।

ইইউতে বক্ততা দেয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন থানবার্গ। সেসময় তিনি পৃথিবীজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা ক্ষতিকর দিকটি তুলে ধরেন। ২০১৯ সালে নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে থুনবার্গ প্রতিনিধিদের বলেছিলেন: “মানুষ মারা যাচ্ছে। সমস্ত বাস্তুতন্ত্র ভেঙে যাচ্ছে। আমরা একটি বিশাল বিলুপ্তির শুরুতে আছি। কিন্তু আপনারা সবাই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা ভাবছেন। ” সেই ভাষনের বিষয়ে থামবার্গ বলেছিলেন, “আমি কখনই রাগ করি না। আমি বাড়িতে রাগও করি না। আমি কেবল তখনই রাগ করেছিলাম। সেই ভাষণের আগেই আমি ভেবেছিলাম, এটি একটি জীবনকালীন সুযোগ। আমার নিশ্চিত হওয়া দরকার যে এর থেকে কিছু বেরিয়ে এসেছে। তাই আমি আমার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে দিয়েছি। ”

তখন তার সাধারণভাবে আপোষহীন বক্তব্যে আর্নি শোয়ার্জনেগার, জন বেকারো, এমমানুয়েল ম্যাক্রোন, এবং ব্রাজিলের জনপ্রিয়তাবাদী রাষ্ট্রপতি জাইর বোলসোনারো, রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের মতো ব্যক্তিরা সমর্থন জানিয়েছিলেন।  তারপর থানবার্গ এমন বিষয়ে কথা বলার জন্য মৃত্যুর হুমকিও পেয়েছেন।

থুনবার্গ বলেন, আমাদের জীবন যাত্রার জন্যই কোভিড -১৯ এর মতো ভাইরাস এতো বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি ভাইরাস যদি অর্থনীতি সম্পূর্নরূপে ধ্বংস করতে পারে, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তন কি পরিমান ক্ষতি করতে পারে সে বিষয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত।থানবার্গ এখন তার স্কুল পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করছেন। সামাজিক বিজ্ঞানে ক্যারিয়ারের পরিকল্পনা করছেন তিনি।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067839622497559