ঘরবন্দি মানুষ, ইন্টারনেটের গতি কমে অর্ধেক - দৈনিকশিক্ষা

ঘরবন্দি মানুষ, ইন্টারনেটের গতি কমে অর্ধেক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস গোটা দেশকে নীরব নিস্তব্ধ করে দিয়েছে। কোটি কোটি মানুষকে ঘরবন্দি করে রেখেছে। শহর গ্রাম সব জায়গায় একই চিত্র। শহরগুলো ভুতুড়ে হয়ে পড়েছে। রাজপথে মানুষজন নেই বললেই চলে। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শনিবার (২৮ মার্চ) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন ফিরোজ মান্না।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এমন পরিস্থিতিতে ঘরে বসে মানুষের সময় কাটানোর প্রথম মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট। ফেসবুক, ইমু, হোয়াটসঅ্যাপ আর টেলিভিশন দেখে কোটি কোটি মানুষ ঘরে বসে সরকারের নির্দেশ পালন করছেন। কিছু মানুষ বই পড়ছেন। আবার কেউবা লেখালেখি করছেন। কিন্তু ঘরবন্দি মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ব্যান্ডউইথের পরিমাণ আগে যা ছিল তাই রয়ে গেছে অপারেটরগুলোর। সরকারের কাছে বিপুল পরিমাণ স্পেক্ট্রাম পড়ে থাকলেও অপারেটররা তা না কিনে যতটুক স্পেক্ট্রাম আছে তা দিয়েই তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘অঙ্কটা খুব সহজ। আমাদের অপারেটররা শহরে ব্যান্ডউইথ দিতে বেশি আগ্রহী। তারা ওই ভাবেই ব্যান্ডউইথ ম্যনেজমেন্ট করেছে। কিন্তু শহর ছেড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ গ্রামে চলে গেছেন। তাদের অপারেটররা ব্যান্ডউইথ দিতে পারছেন না। ভয়েস কলের পরিমাণ বেড়েছে ৪০ শতাংশ। আর ডেটার পরিমাণ বেড়ে শতকরা ৬০ ভাগ। কিন্তু এই পরিমাণ কল ও ডেটা দিতে পারছে না অপারেটররা। গ্রামীণফোনের প্রয়োজন ১০০ মেগাহার্জ স্পেক্ট্রাম সেখানে তাদের আছে মাত্র ৪০ মেগাহার্জ। রবি রয়েছে ৩৭ মেগাহার্জ। অথচ রবির গ্রাহক অনুযায়ী প্রয়োজন তাদের অনন্ত ৬০ মেগাহার্জ। সরকারের কাছে বিপুল পরিমাণ স্পেক্ট্রাম পড়ে আছে- অথচ অপারেটররা তা কিনছে না। অল্প খরচে বেশি বেশি ব্যবসা করার জন্যই তারা এ কাজ করছে ‘

‘চায়নাতে উচ্চগতির ইন্টারনেট ও উন্নত প্রযুক্তির সহযোগিতায় করোনার ভয়ঙ্কর ভাইরাসের মোকাবেলা তারা করেছে। আমাদের পক্ষেও এটা করা সম্ভব ছিল। কিন্তু আমরা গত কয়েক বছর যে কাজটি করেছি তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতি। এটাই যে শেষ কথা না তা আমাদের করোনা ভাইরাস এসে শিখিয়ে দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন হলেও টেকনোলজির উন্নয়ন ঘটেনি। আমাদের এখন এ্যাপ তৈরি করার কোন প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন এখন রোবট তৈরি করা। আমাদের আউটসোর্সিং করার প্রয়োজন নেই- প্রয়োজন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র তৈরি করা। চায়নায় করোনা মোকাবেলায় রোবট ব্যবহার করা হয়েছে। এই রোবট দিয়ে তারা হাসপাতালে খাবার পাঠিয়েছে। চিকিৎসা কাজে রোবেটের সহযোগিতা নেয়া হয়েছে।’

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘দেশের মানুষ এখন ঘরবন্দি আছেন। তাদের সময় পার করার জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে ইন্টারনেট। সেই ইন্টারনেটের গতি এত কমে গেছে যে, কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। কোটি কোটি মানুষ নানা ধরনের ডিভাইজ ব্যবহার করছেন। এই সময়টাতে ইন্টারনেটের গতি কম হবেই। দেশে ১০ দিনের সরকারি ও বেসরকারি সব অফিস লকডাউন করা হয়েছে। এই লকডাউন যে কত দিন চলবে তা বলা মুশকিল। গ্রামের মানুষকে ইন্টারনেট ও ভয়েস কল সুবিধা দেয়ার জন্য টেলিটকের স্পেক্ট্রাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কারণ টেলিটক দিয়ে আমরা পার্বত্য এলাকা হাওড় ও সুন্দরবন এলাকায় সার্ভিস দেয়া হচ্ছে। এখন আমরা দেশের প্রতিটি গ্রামে সার্ভিস দেয়ার কাজ শুরু করব। ইতোমধ্যে ৪শ’ বিটিএস (বেইস স্টেশন) নির্মাণ করার কাজ শুরু করা হচ্ছে। বিটিএসগুলো নির্মাণ হলে টেলিটকের সার্ভিস হবে অন্য যে কোনো অপারেটরের চেয়ে অনেক শক্তিশালী হবে। লকডাউন সময়ের মধ্যেই আমরা নেটওয়ার্ক বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

সূত্র জানিয়েছে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং জরুরি সেবা চালু রাখা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতি ঠেকাতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য সামরিক বাহিনী মাঠে নেমেছে। তারা জনসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে ঘরে থাকার। সারাদেশে লকডাউন ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে (স্বাধীনতা দিবস ও সরকারী ছুটিসহ) ৪ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আওতায় সীমিত আকারে সরকারি অফিসসমূহ পরিচালিত হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনলাইনে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করবেন এবং অফিস কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। এ সময়ে বাস, ট্রেন, লঞ্চ অত্যন্ত সীমিত আকারে চলাচল করবে। এছাড়াও বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, নার্স, সকল পর্যায়ের সরকারি কর্মচারী এবং জনপ্রতিনিধিগণ সমন্বিতভাবে স্থানীয় পর্যায়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় একযোগে কাজ করবেন বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনীকে সব জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এ বিষয়ক কার্যক্রম সমন্বয়ের নির্দেশনা এবং সব জিওসিকে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য বলা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে সব তফসিলী ব্যাংকের জন্য সীমিত আকারে সেবা প্রদানের জন্য ব্যাংকিং সময় নির্ধারণ করে অফিস আদেশ জারি করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে সবাই ঘরে অবস্থান করার আহ্বান জানানো হয়। জনসমাবেশ পরিহার করার কথাও বলা হয়েছে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044620037078857