সহিংসতায় শিক্ষার্থী খুনের জেরে বন্ধ হয়ে যায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তিনটি আবাসিক হল। তারপর কেটে গেছে দীর্ঘ ১০ বছর। আর সেই ফাঁকে আবাসিক হলগুলোর আসবাবপত্র ঘুণে খাচ্ছে, নষ্ট হয়ে গেছে বৈদ্যুতিক সংযোগ। ঘটনার ৭ বছরের মাথায় আবাসিক হলগুলোর মধ্যে ছাত্রীনিবাসটি খুলে দেয়া হলেও বন্ধ রয়েছে অন্য দুটি ছাত্রাবাস। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ইনস্টিটিউটের ছাত্ররা।
ইনস্টিটিউ কর্তৃপক্ষ জানায়, ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাসে তিনটি আবাসিক হল রয়েছে। এর মধ্যে শাহ্ নেয়ামতুল্লাহ (রহ.) ছাত্রাবাস, শহীদ মোনায়েম ছাত্রাবাস বন্ধ রয়েছে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে। অন্যদিকে আক্তারুন্নেসা ছাত্রীনিবাসটি খুলে দেয়া হয় খুনের ঘটনার ৭ বছর পর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জানুয়ারি ছাত্র মৈত্রীর পলিটেকনিক শাখার সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে সানিকে কুপিয়ে জখম করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ওই দিন বিকেলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সানির মৃত্যু হয়। এ হামলায় ছাত্র মৈত্রীর আরও কয়েকজন নেতা গুরুতর আহত হন। ওই দিনই কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য পলিটেকনিক ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেন এবং শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ত্যাগের নির্দেশ দেন। এর প্রায় সাড়ে চার মাস পর ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ মে ক্যাম্পাস খুলে দেয়া হলেও ছাত্রাবাস আর খুলে দেয়া হয়নি। এখনো বন্ধ রয়েছে সেগুলো।
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাসে তিনটি ছাত্রাবাসে প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা ছিল। ছাত্রাবাস খোলা থাকা অবস্থায় এই এলাকা শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর থাকত। কিন্তু এখন সেখানে ভুতুড়ে পরিবেশ। চারদিকে সুনসান নীরবতা। যাতায়াতের রাস্তাগুলো ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কয়েক জন শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, বাইরের মেসে এক-দেড় হাজার টাকা ভাড়া। তার উপর ছোট্ট কক্ষে কয়েক জন গাদাগাদি করে থাকতে হয়। অথচ ১০ বছর ধরে বন্ধ পড়ে আছে ছাত্রাবাস দুটি। মেয়েদের ছাত্রীনিবাস চালু হলেও ছেলেদের দুটি এখনো বন্ধ। খুলে দেয়ার জন্য আন্দোলন হচ্ছে, কিন্তু মেরামত না করলে সেখানে ওঠার পরিবেশও নেই।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ছাত্রাবাসগুলো দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ফার্নিচার ও বৈদ্যুতিক লাইনসহ অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক কক্ষের দরজা-জানলা ও গ্রিল নেই। এগুলো সংস্কার করতে ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডারও হয়েছে। শিগগিরই কার্যাদেশ দেয়া হবে। সংস্কারকাজ শেষ হলে চলতি বছরের শেষদিকে ছাত্রাবাস দুটি খুলে দেয়া হবে।