ঘূর্ণিঝড় আমফানের আতঙ্কের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় শহর দিঘার সমুদ্রে অদ্ভূত ফেনা দেখা গেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বরফ পড়ে আছে। কিন্তু একটু মনোযোগ দিয়ে দেখলেই বোঝা যায় যে এগুলি বরফ নয়, আসলে সমুদ্রের ফেনা।
আবহাওয়া দফতর ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে যে, ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আমফান। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়তে পারে। তার আগে দিঘার সমুদ্রে এমন সাদা ফেনা দেখা যাওয়ায় নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে এই ফেনার কোনও সম্পর্ক আছে কি না তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে উপকূলবর্তী স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দা মানস জানান, এর আগে দিঘার সমুদ্রে এত সাদা সাদা সাবানের মতো ফেনা কখনও দেখেননি। তিনি বলেন, এগুলো দেখে খুব অবাক হয়েছি। কোত্থেকে এমন ফেনা আসছে তা জানি না।
তবে সমুদ্র বিজ্ঞানী আনন্দদেব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই ঘটনা একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। এ নিয়ে ভয় পাওয়ারও কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, লকডাউনের ফলে সমুদ্র এখন অনেকটা দূষণমুক্ত। আগে দূষণের জন্য সমুদ্রের তলদেশের সেডিমেন্ট সমুদ্রের নিচের দিকেই থাকত। কিন্তু এখন দূষণ না থাকায় সেসব উপাদান পানির উপরের স্তরে চলে আসছে। আর আমফানের প্রভাবে সমুদ্রের ওপরে বাতাসের গতিবেগ এখন অনেক বেড়েছে। যার ফলে বাতাসের ধাক্কায় সমুদ্রের পানিতে উৎপন্ন হচ্ছে ফেনা। যা আছড়ে পড়ছে উপকূলে।
এদিকে, দিঘার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। আগে সমুদ্রের ঢেউ বা রোলিং কম ছিল। তাই ফেনা কম উৎপন্ন হতো। এখন সমুদ্রের পানিতে সার্কুলেশন অনেক বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বেড়েছে সমুদ্রের ওপরে বাতাসের গতিবেগ। তাই অনেক বেশি ফেনা বেড়েছে।
তবে শুক্রবার রাতের তুলনায় শনিবার ফেনা কিছুটা কমতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ফেনার পরিমাণ আরও কমেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। লকডাউন চলায় দীঘা উপকূল এখন একেবারেই জনমানব শূন্য।- আনন্দবাজার