চট্টগ্রাম নগরীর কৃষ্ণকুমারী স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অর্পিতা নাথ। রোববার (১৭ নভেম্বর) পাথরঘাটার যে বাড়িতে সকালে গ্যাস লাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, ছোট ভাইকে নিয়ে সে বাড়িতেই ছিল অর্পিতা। ভাইকে নাস্তা আনার জন্য পাঠিয়ে স্কুলের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে।
কিন্তু ভাইয়ের আনা নাস্তা খাওয়া কিংবা স্কুলে যাওয়া, কিছুই হলো না অর্পিতার। গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় অর্পিতা এখন হাসপাতালে। বেশ গুরুতর অবস্থায় অর্পিতাকে চমেক হাসপাতাল থেকে নেওয়া হচ্ছে ঢাকা মেডিকেলে।
অর্পিতার বাবা কাজল নাথ বলেন, কার্তিক পূজা উপলক্ষে স্ত্রীকে নিয়ে রাঙ্গুনিয়ার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন তারা। ঘরে ছিল দুই সন্তান। ছেলে অর্ণব নাস্তা আনতে গিয়েছিল দোকানে। এরই মধ্যে ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। প্রাণে বেঁচে থাকলেও মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাই অর্পিতাকে স্থানান্তর করা হয়েছে হয়েছে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে।
কথা শেষ হতে না হতেই অঝোরে কাঁদতে থাকেন কাজল নাথ ও তার স্ত্রী মনি রানী। দুর্ঘটনার খবর শুনে রাঙ্গুনিয়া থেকে ছুটে এসেছেন তারা। মেয়েকে বাঁচাতে সবার কাছে আশির্বাদ চেয়েছেন কাজল নাথ।
চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় রোববার সকালে গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু হয়। এতে আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।
স্থানীয়রা জানান, বিস্ফোরণে একটি ভবনের সীমানাপ্রাচীর ধসে রাস্তার ওপর পড়ে পথচারীরা আহত হয়েছেন। এছাড়া ভবনের উল্টো দিকের জসীম বিল্ডিংয়ের নিচতলার দোকান বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী সাংবাদিকদের বলেন, বড়ুয়া বিল্ডিং নামে একটি ভবনের নিচতলায় সীমানা প্রাচীরের পাশেই ওই বাড়ির গ্যাস রাইজার। বিস্ফোরণটি সেখানেই হয়েছে। হয়তো রাইজারে কোনো সমস্যা ছিল। সকালে বাসায় রান্না করার সময় অথবা কারও ফেলা সিগারেটের আগুন থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, গুরুতর দগ্ধ সাতজনকে হাসপাতালে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। অন্য ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।