চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত - দৈনিকশিক্ষা

চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল চিত্তরঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বয়েন্টনচিচ বেথেসডা সাউথ হাসপাতালের হসপিস কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল) তার মৃত্যু হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সি আর দত্ত বীর উত্তমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

সি আর দত্ত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বীর উত্তম খেতাবধারী এই মুক্তিযোদ্ধার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব বলেন, “তিন দিন আগে তিনি বাসায় পড়ে গিয়ে কোমায় চলে যান। এরপর আর তার সংজ্ঞা ফিরল না। তিনি চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে।

১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে জন্মগ্রহণ করেন চিত্ত রঞ্জন দত্ত। তার পৈতৃক বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে। তাঁর বাবার নাম উপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ও মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা দত্ত।

শিলংয়ের লাবান গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন সি আর দত্ত। পরে তার বাবা চাকরি থেকে অবসর নিয়ে হবিগঞ্জে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। হবিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মাধ্যমিক পাস করেন। পরে কলকাতার আশুতোষ কলেজে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হয়ে ছাত্রাবাসে থাকা শুরু করেন তিনি। এরপর খুলনার দৌলতপুর কলেজের বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হন। পরে এই কলেজ থেকেই বিএসসি পাস করেন।
১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে চিত্ত রঞ্জন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।  কিছুদিন পর সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে কমিশন পান তিনি। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে সৈনিক জীবনে প্রথম যুদ্ধে লড়েন। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের পাক-ভারত যুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে আসালংয়ে একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ করেন। 

বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রথম ডিরেক্টর জেনারেল ছিলেন সি আর দত্ত। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত তিনি হেডকোয়ার্টার চিফ অব লজিস্টিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ এ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। ১৯৭৯ এ বিআরটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। এর পর ১৯৮২ এ তিনি পুনরায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৮৪ এ তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল খোয়াই শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট ডাউকি সড়ক পর্যন্ত এলাকা নিয়ে গঠিত হয় ৪ নম্বর সেক্টর। এই সেক্টরে কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন সি আর দত্ত।

দায়িত্ব নিয়েই প্রথমে সিলেটের রশিদপুরে ক্যাম্প তৈরি করেন সি আর দত্ত। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চা বাগান থাকার সুবাদে আড়াল থেকে শত্রুদের ঘায়েল করেন দ্রুত সময়ে। পরে তিনি রশিদপুর ছেড়ে মৌলভীবাজার ক্যাম্প স্থাপন করেন। তার অসামান্য অবদানের জন্য তাকে বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ঢাকার কাঁটাবন থেকে কারওয়ান বাজার সিগন্যাল পর্যন্ত সড়কটি ‘বীরউত্তম সি আর দত্ত’ সড়ক নামে নামকরণ করা হয়।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036101341247559